শীতের কুয়াশা নামতেই শরীর যেন একটু বাড়তি যত্ন দাবি করে—আর সেই যত্নে ছোট্ট এক ফলই পারে বড় কাজ করতে। খেজুর সেই ফল, যা শীতে শরীরকে দেয় উষ্ণতা, শক্তি আর রোগ প্রতিরোধের প্রাকৃতিক সমর্থন।
শীত বাড়লেই ক্লান্তি আর অলসতা যেন নিত্যসঙ্গী। খেজুরের প্রাকৃতিক গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও সুক্রোজ দ্রুত শক্তি জোগায়, আবার ফাইবার থাকায় রক্তে শর্করার হঠাৎ বৃদ্ধি থামায়। এ কারণে শীতের সকালে বা বিকেলে কয়েকটি খেজুরই যথেষ্ট শক্তির জোগান দিতে পারে।
ঠান্ডার সময় সর্দি-কাশি বাড়লেও খেজুরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে। এতে থাকা ফ্ল্যাভোনয়েড ও ক্যারোটিনয়েড শরীরকে মৌসুমী সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে ফ্লু বা ভাইরাল হওয়ার সম্ভাবনাও কমে।
শীতে ফাইবার-ঘাটতির কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ে। খেজুরের উচ্চমাত্রার ফাইবার হজমকে স্বাভাবিক রাখে এবং অন্ত্রের গতিশীলতা উন্নত করে। এতে উপকারী ব্যাকটেরিয়াও বৃদ্ধি পায়, যা হজম শক্তিকে আরও সুস্থ রাখে।
যাদের ঠান্ডায় জয়েন্টে ব্যথা বাড়ে, খেজুর তাদের জন্যও উপকারী। এতে থাকা ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস হাড়কে শক্তিশালী করে এবং প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
হৃদরোগীদের জন্যও খেজুর একটি নিরাপদ বিকল্প। পটাসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, আর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলেস্টেরল ও প্রদাহ কমায়। ফলে শীতকালের হৃদরোগ ঝুঁকিও কমে।
শুষ্ক আবহাওয়ায় ত্বক ও চুলের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা কমে যায়। খেজুরের ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, ত্বককে রাখে মসৃণ এবং চুলকে আরও শক্তিশালী।
1. শীতে কি প্রতিদিন খেজুর খাওয়া যায়?
হ্যাঁ, প্রতিদিন ৩–৫টি খেজুর খাওয়া শারীরিক শক্তি ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
2. ডায়াবেটিস রোগীরা কি খেজুর খেতে পারবেন?
পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
3. শীতকালে কোন সময়ে খেজুর খাওয়া সবচেয়ে ভালো?
সকালে খালি পেটে বা বিকেলে খাবার হিসেবে খাওয়া উপকারী।
4. খেজুর কি ওজন বাড়ায়?
অতিরিক্ত খেলে ক্যালোরি বাড়তে পারে, তবে পরিমিত খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
5. শিশুদের কি খেজুর খাওয়ানো যায়?
হ্যাঁ, দুই বছরের বেশি বয়সী শিশুদের অল্প পরিমাণে খেজুর দেওয়া যেতে পারে।

