একটি ভাষা কি কারও প্রাণ কেড়ে নিতে পারে? ওড়িশায় কাজ করতে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার ‘অপরাধে’ প্রাণ হারালেন মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকার পরিযায়ী শ্রমিক জুয়েল রানা। এই মর্মান্তিক ঘটনার পর এবার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য—বাংলা ভাষা বলা কখনওই অপরাধ হতে পারে না।
সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে ওড়িশার সম্বলপুরে কাজের সময় কয়েকজন দুষ্কৃতী জুয়েল রানাকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে মারধর করে। অভিযোগ, প্রথমে আধার কার্ড দেখতে চাওয়া হয়, তারপর শুরু হয় নির্মম নির্যাতন। গুরুতর জখম অবস্থায় জুয়েলকে বাঁচানো যায়নি। তাঁর আরও দুই সহকর্মীও আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।
এই ঘটনার খবর ছড়াতেই দ্রুত পদক্ষেপ নেয় রাজ্য পুলিশ। সুতি থানায় জিরো এফআইআর রুজু করা হয় এবং ইতিমধ্যে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের একটি দল ওড়িশায় যাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
শনিবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর যে অত্যাচার নেমে এসেছে, তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি আক্রান্ত ও নিগৃহীত পরিবারগুলির পাশে থাকার আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, মানুষের জীবনের কোনও মূল্য নেই, তবুও এমন ঘটনায় রাজ্য সরকার অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দেওয়ার অঙ্গীকার করছে।
এই ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে—ভাষা ও পরিচয়ের রাজনীতিতে কি আরও নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা?
প্রশ্ন ও উত্তর
1. জুয়েল রানা কোথাকার বাসিন্দা ছিলেন?
তিনি মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
2. কেন তাঁকে মারধর করা হয়েছিল বলে অভিযোগ?
বাংলা ভাষায় কথা বলায় তাঁকে ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহ করে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
3. এই ঘটনায় পুলিশ কী পদক্ষেপ নিয়েছে?
সুতি থানায় জিরো এফআইআর দায়ের হয়েছে এবং ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
4. তদন্তের জন্য কি ওড়িশায় যাচ্ছে রাজ্য পুলিশ?
হ্যাঁ, তদন্তের স্বার্থে রাজ্য পুলিশের একটি দল ওড়িশায় যাচ্ছে।
5. মুখ্যমন্ত্রী কী সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন?
নিহত ও আক্রান্ত পরিবারগুলিকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও সব ধরনের সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন।

