খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ অর্থ মন্ত্রক সমাজের প্রান্তিক মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ এবং আর্থ-সামাজিক দিক থেকে উপেক্ষিত শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে অঙ্গীকারবদ্ধ। নতুন শিল্পোদ্যোগী থেকে কঠোর পরিশ্রমী কৃষক সহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে মন্ত্রক একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হ’ল – লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা পূরণ তথা আত্মনির্ভর করে তোলা।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৫’র ৮ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা (পিএমওয়াই)-র সূচনা করেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে কর্পোরেট বহির্ভূত, কৃষি বহির্ভূত ক্ষুদ্র ও ছোট শিল্পোদ্যোগগুলিকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়। এই কর্মসূচির ষষ্ঠ বার্ষিকীতে অর্জিত সাফল্যগুলি এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক।
মুদ্রা যোজনা কেন?
ভারত এক নবীন দেশ, যেখানে উৎসাহ ও প্রত্যাশার বিরাম নেই। তাই, ভারতের অগ্রগতির বীজ বপণ করে তা প্রস্ফুটিত করার জন্য যুবসমাজের সৃজনশীল উদ্ভাবনগুলির যথাযথ বিকাশে অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি। দেশে অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বর্তমান ঘাটতিগুলি নতুন প্রজন্মের উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে নিরসনে জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট সরকার তার প্রথম বাজেটেই প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা শুরু করার কথা ঘোষণা করে।
মুদ্রা যোজনা কিভাবে পরিচালিত হয়?
এই কর্মসূচির আওতায় তফশিলভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক, আঞ্চলিক গ্রামীণ ব্যাঙ্ক, ছোট অর্থ সহায়তা ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও মাইক্রো ফিনান্স প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে বন্ধকীমুক্ত ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে। উৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিষেবা এবং কৃষির সঙ্গে যুক্ত সহযোগী ক্ষেত্র থেকে উপার্জনের জন্য এই ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়। শিশু, কিশোর ও তরুণ – এই তিনটি ক্ষেত্রে মুদ্রা ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়ে থাকে।
• শিশু কর্মসূচিতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
• কিশোর কর্মসূচিতে ৫০ হাজার টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
• তরুণ ৫ লক্ষ টাকা থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
নবীন প্রজন্মের যুবাদের মধ্যে শিল্পোদ্যোগীতার মানসিকতা গড়ে তুলতে শিশু, কিশোর ও তরুণ কর্মসূচির মাধ্যমে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।
মুদ্রা যোজনার সাফল্য (১৯ মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত)
• যোজনার সূচনার সময় থেকে ২৮ কোটি ৬৮ লক্ষেরও বেশি আবেদনের ক্ষেত্রে ১৪ লক্ষ ৯৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
• ২০২০-২১ এ যোজনার মাধ্যমে ৪ কোটি ২০ লক্ষ ঋণ আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
• প্রতিটি আবেদনের ক্ষেত্রে গড় ঋণ সহায়তার পরিমাণ প্রায় ৫২ হাজার টাকা।
• শিশু কর্মসূচির মাধ্যমে ৮৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ দেওয়া হয়েছে।
• নবীন শিল্পোদ্যোগীদের প্রায় ২৪ শতাংশ ঋণ সহায়তা।
• মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের ৬৮ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ সহায়তা।
• তপশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর জন্য প্রায় ৫১ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ সহায়তা।
• তপশিলি জাতি ও উপজাতির মানুষের জন্য ২২.৫৩ শতাংশ ঋণ সহায়তা।
• সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে প্রায় ১১ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ সহায়তা।
• কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের সমীক্ষা অনুযায়ী ২০১৫-২০১৮ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে অতিরিক্ত ১ কোটি ১২ লক্ষ কর্মসংস্থান। এর মধ্যে ৬৯ লক্ষ লক্ষ বা ৬২ শতাংশ ক্ষেত্রে মহিলাদের কর্মসংস্থান হয়েছে। সূত্র – পিআইবি।