খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ অর্থ মন্ত্রকের ব্যয় বরাদ্দ দপ্তর “মূলধনী খাতে ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তা” কর্মসূচির আওতায় ১১,৮৩০ কোটি টাকা দিয়েছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, আত্মনির্ভর ভারত প্যাকেজের অঙ্গ হিসেবে অর্থমন্ত্রী গত বছরের ১২ অক্টোবর মূলধনী খাতে ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচি গ্রহণের উদ্দেশ্যই হল কোভিড-১৯ মহামারীর দরুণ কর রাজস্ব খাতে ঘাটতির ফলে রাজ্য সরকারগুলিকে যে আর্থিক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে তা মোকাবিলায় সাহায্য করা।
অর্থ ব্যবস্থায় মূলধনী খাতে ব্যয়ের বিবিধ প্রভাব রয়েছে। এর ফলে একদিকে যেমন অর্থনীতির ভবিষ্যৎ উৎপাদনশীল ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে তেমনই অর্থ ব্যবস্থায় উচ্চ হারে অগ্রগতির সম্ভাবনা থাকে। তাই, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিকূল আর্থিক অবস্থা হওয়া সত্ত্বেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে মূলধনী খাতে ব্যয়ের জন্য রাজ্যগুলিকে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে। এই কর্মসূচি ২০২১-২২-এও কার্যকর থাকবে। রাজ্য সরকারগুলির কাছ থেকে এই কর্মসূচির ব্যাপারে ভালো সাড়া মিলেছে। কেন্দ্রীয় ব্যয় বরাদ্দ দপ্তর কর্মসূচির আওতায় ২৭টি রাজ্যের জন্য ১১,৯১২ কোটি টাকার মূলধনী ব্যয়ের একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র – স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন, জল সরবরাহ, কৃষিসেচ, বিদ্যুৎ, পরিবহণ, শিক্ষা ও শহরাঞ্চলীয় উন্নয়ন বাবদ এই অর্থ খরচ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির তিনটি অংশ রয়েছে। প্রথম পর্বে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় এবং পার্বত্য রাজ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে নয়টি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় ও পার্বত্য রাজ্যকে কর্মসূচির আওতায় ২,৫০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। দ্বিতীয় অংশে বাকি রাজ্যগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এই রাজ্যগুলির জন্য মূলধনী খাতে ব্যয়ে ৭,৫০০ কোটি টাকা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় করের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলির সমানুপাতিক হারের ভিত্তিতে বন্টন করা হবে।
কর্মসূচির তৃতীয় অংশে রাজ্যগুলিতে নাগরিক-কেন্দ্রিক বিভিন্ন সংস্কারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য ২ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক গত বছর যে চারটি ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য রাজ্যগুলিকে উৎসাহিত করে তার মধ্যে অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে সংস্কারের কাজ সম্পূর্ণ করার ভিত্তিতে রাজ্যগুলিকে এই অর্থ দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রক সংস্কারমূলক উদ্যোগের আওতায় গৃহীত কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন হয়েছে কিনা তা যাচাই করে শংসাপত্র দেবে। সেই শংসাপত্রের ওপর ভিত্তি করেই অর্থ মন্ত্রক রাজ্যগুলিকে সংশ্লিষ্ট মূলধনী খাতে ব্যয়ের অর্থ বরাদ্দ করবে। উল্লেখ করা যেতে পারে, অর্থ মন্ত্রক যে চারটি ক্ষেত্রে সংস্কারের জন্য রাজ্যগুলিকে উৎসাহিত করেছিল তার মধ্যে রয়েছে – এক দেশ এক রেশন কার্ড; সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা; শহরাঞ্চলীয় স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলিতে সংস্কার এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে সংস্কার। ইতিমধ্যেই ১১টি রাজ্য উক্ত চারটি ক্ষেত্রের মধ্যে অন্তত তিনটিতে সংস্কারের কাজ শেষ করেছে। সেই অনুযায়ী এই ১১টি রাজ্যকে মূলধনী খাতে অতিরিক্ত বরাদ্দ মঞ্জুর করা হয়েছে। সূত্র – পিআইবি।