নিজস্ব প্রতিনিধি, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, উঃ ২৪ পরগণাঃ দেবকুমার ভট্টাচার্য্য ১৬ বছর আগে ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগ দিয়েছিলেন। মছলন্দপুরের বেলেডাঙার তুলসীর বাগানের বাসিন্দা। সম্প্রতি পাঠানো হয় ট্রেনিং করতে রাজস্থানের পাঠানকোট। ওখান থেকে ফিরছিলেন নয়জন জওয়ান। গাড়ির স্পিড বেশি থাকায় গাড়িটি উল্টে যায়। গাড়িতে থাকা বিস্ফোরক ফেটে গিয়ে গাড়িতে আগুন ধরে যায়।
ঘটনাস্থলেই মারা যান তিন জওয়ান। ৬ জন আহত। নিহত তিনজনের মধ্যে মছলন্দপুরের দেবকুমার ভট্টাচার্য্য মারা যান। ঘটনাটি ঘটে রাজস্থানের পাঠানকোটে। ২৪ মার্চ, বুধবার এর ঘটনা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ বাড়িতে ফোন আসে। কান্নায় ভেঙে পড়েন আত্মীয়-স্বজন ও পরিবার। এই ঘটনায় স্থানীয় লোকজন খুবই শোকাহত। শুক্রবার বিকেলে ওর মরদেহ কফিনবন্দি হয়ে বাড়িতে এলে কান্নার রোল ওঠে। ঘটনাচক্রে যেদিন কফিনবন্দি হয়ে দেবকুমার বাড়ি ফিরলেন সেই ২৬শে মার্চ ছিল তার জন্মদিন। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই তাঁকে দেশের জন্য প্রাণ দিতে হলো। বীর শহীদের মরদেহ শেষ শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় স্থানীয় বাসিন্দা ও আশেপাশের বহু মানুষকে। এই বীর ভারতমাতার সন্তান দেবকুমারের দুই সন্তান। এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বয়স ১১ বছর, ছেলের বয়স মাত্র ৬ বছর। বৃদ্ধ বাবা বিষ্ণুপদ ভট্টাচার্য্য যজমানি করে ছেলেকে মানুষ করেছিলেন। মা-বাবা ছেলের এই অকাল মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছে না। মা একেবারেই নিথর হয়ে পড়েছেন। কফিনবন্দি মরদেহ বাড়িতে প্রবেশ করার পরেই অঝোর ধারায় চোখের জল নেমে আসে তাঁর চোখ থেকে। সমবেদনা জানাতে উপস্থিত ছিলেন, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তাপস কুমার ঘোষ সহ পঞ্চায়েতের সদস্যরা।
মছলন্দপুর এক্স আর্মি ইউনিয়নের সভাপতি সুধীর নাগ সহ অবসরপ্রাপ্ত জওয়ানেরা এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বীর শহীদের মরদেহ বাড়িতে এসে পৌঁছায় এবং সামরিক বাহিনী থেকে আসা জওয়ানেরা মার্চ করে গান ডাউন করেন। প্রধান তাপস কুমার ঘোষ, মছলন্দপুর তদন্ত কেন্দ্রের আধিকারিক অসীম পাল সহ স্থানীয় লোকরা ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানায় বীর শহীদ দেব কুমার ভট্টাচার্যকে। গোবরডাঙ্গা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।