মিশন মোড পর্যায়ে ভারতীয় রেল ২০৩০ সালের মধ্যে গণ পরিবহনে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ‘নেট জিরো’ বা শূন্য মাত্রার নামিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ ভারতীয় রেলওয়েতে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। কারণ প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী ভারতীয় রেল বিদ্যুতের চাহিদা মেটানোর জন্য আত্মনির্ভর হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পুনর্নবীকরণ শক্তি প্রকল্পের জন্য রেলের খালি জমিগুলি ব্যবহার করে রেল স্টেশনগুলিতে সৌর বিদ্যুৎ সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় রেল তার ট্রাকশন পাওয়ারের প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য সৌর শক্তিকে কাজে লাগাতে এবং পরিবহন ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ সবুজায়নের লক্ষ্যপূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

রেলমন্ত্রক ফাঁকা জমিতে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারের ফলে ভারতীয় রেল গণ পরিবহণে কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ ‘নেট জিরো’ বা শূন্য মাত্রার নামিয়ে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরজন্য কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী শ্রী পীযুষ গোয়েল সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারের ওপর জোর দিয়েছেন।

ভারতীয় রেলের বর্তমান বিদ্যুতের চাহিদা সৌর প্রকল্পগুলির মাধ্যমে পূরণ করা হবে। এতে ভারতীয় রেল সবুজায়নের পাশাপাশি আত্ননির্ভর হয়ে উঠবে। ভারতীয় রেল সবুজ শক্তি উৎপাদন প্রক্রিয়ায় যে উদ্যোগ নিয়েছে তারই অঙ্গ হিসেবে উত্তরপ্রদেশের রায়বেরিলীতে ৩ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে সৌর বিদ্যুৎ সংগ্রহ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেল বিভিন্ন স্টেশনের বিল্ডিং-এর মাথায় প্রায় ১০০ মেগাওয়াটের সৌর প্যানেল বসিয়েছে।

আরও পড়ুন -  মটন এবং ডিম দিয়ে একটি সুস্বাদু রেসিপি হলো "মটন ডিম কারি"

এর পাশাপাশি মধ্যপ্রদেশের বিনায় ১.৭ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুতের একটি প্রকল্প চালু করা হয়েছে। সেখান থেকে সরাসরি ওভারহেড ট্রাকশন সিস্টেমের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। আপাতত এটি পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া পূর্ণমাত্রায় চালু করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারত হেভি ইলেক্ট্রিক্যাল লিমিটেডের সহযোগিতায় ভারতীয় রেল বিশ্বের মধ্যে এই প্রথম এ ধরণের প্রকল্প চালু করতে চলেছে। এতে বার্ষিক প্রায় ২৫ লক্ষ ইউনিট বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন হবে এবং ভারতীয় রেলের প্রতি বছর প্রায় ১.৩৭ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

আরও পড়ুন -  ‘কাহো না পেয়ার হ্যায়’ অভিনেত্রী আরও সাহসী হলেন, হৃদয় ছটফট করবে ছবি দেখলে

ভারতীয় রেল এবং ভারত হেভি ইলেট্রিক্যাল লিমিটেডের (ভেল) কর্মকর্তাদের নিরলস পরিশ্রমের ফলে এই উদ্ভাবনী প্রকল্পটিতে সাফল্য এসেছে। ভেল তার কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার আওতায় এই প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছিল। কোভিড-১৯এর জেরে লকডাউনের কারণে মানব সম্পদ ও সরঞ্জাম সরবরাহে অসুবিধার কারণে এই প্রকল্পের কাজ সাময়িক বাধাপ্রাপ্ত হয়। তবে তা দ্রুত কাটিয়ে উঠে পুনরায় এই প্রকল্পের কাজ চালু হয়েছে।

এছাড়াও ভারতীয় রেল বৈদ্যুতিক ট্রাকশন শক্তির প্রয়োজনীয়তা পূরণের জন্য দুটি সৌর প্রকল্প কেন্দ্রের কাজ হাতে নিয়েছে। এরমধ্যে একটি হল ছত্তিশগড়ের ভিলাই। সেখানে রেলের খালি জমিতে ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ২০২১এর ৩১শে মার্চের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। আর একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে হরিয়ানার দিওয়ানায়। সেখানে দুই মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। চলতি বছরের ৩১শে আগস্টের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন -  অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা, এই জনপ্রিয় জুটি গাঁটছাড়া বাঁধার আগেই জলের মধ্যে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত'র দৃশ্য

রেলওয়ে এনার্জি ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী লিমিটেড সৌরশক্তির ব্যবহার আরও বাড়াতে নিরলস কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যে ভারতীয় রেলওয়ে খালি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি গড়ে তোলার জন্য প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করেছে। পাশাপাশি ভারতীয় রেলের ট্রাকশন নেটওয়ার্কে সৌর বিদ্যুৎ সরাসরি সরবরাহ করার ফলে ট্রেনের গতি যাতে ঠিক থাকে এবং সুরক্ষা বজায় থাকে সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে। একইসঙ্গে পরিকাঠামোগত ব্যয় হ্রাস করে দূর্ঘটনা রোধে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় ভারতীয় রেল কার্বন নিঃসরণ শূন্য মাত্রায় নামিয়ে নিয়ে আসার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সূত্র – পিআইবি।