নীরব সমুদ্রের নিচে যে শক্তি ঘুমিয়ে থাকে, সময় এলেই তা ভয়ংকর রণহুঙ্কারে জেগে ওঠে। ঠিক তেমনই ডিসেম্বরের শান্ত বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে ভারত বিশ্বের দরবারে নিজের সামরিক সক্ষমতার জোরালো বার্তা দিল।
বিশাখাপত্তনম উপকূলের কাছে ভারতের পরমাণু শক্তিচালিত ডুবোজাহাজ INS Arighaat থেকে সফলভাবে উৎক্ষেপণ করা হল কে-৪ (K-4) ইন্টারমিডিয়েট রেঞ্জ ব্যালিস্টিক মিসাইল। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভারত প্রমাণ করল, সমুদ্রের গভীর থেকেও নির্ভুল আঘাত হানতে তারা সম্পূর্ণ সক্ষম।
কে-৪ মিসাইলটির নামের ‘K’ অক্ষরটি নিছক প্রতীক নয়। এটি ভারতের ‘মিসাইল ম্যান’ A. P. J. Abdul Kalam-এর প্রতি শ্রদ্ধার স্মারক। তাঁর হাত ধরেই যে ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সূচনা হয়েছিল, আজ সেই স্বপ্নই আরও শক্ত ভিত পেল সমুদ্রের অতলে।
অগ্নি-৩ ক্ষেপণাস্ত্রের নৌ-সংস্করণ হিসেবে তৈরি K-4 মিসাইল সাবমেরিনের সিলো থেকে জলের ওপর ভেসে উঠে মুহূর্তের মধ্যেই আকাশে ছুটে যায়। প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার পাল্লার এই মিসাইল পারমাণবিক ওয়ারহেড বহনে সক্ষম।
এই সফল পরীক্ষার ফলে ভারতের ‘নিউক্লিয়ার ট্রায়াড’-এর সবচেয়ে গোপন ও শক্তিশালী অংশ আরও মজবুত হল। অরিহন্ত শ্রেণির সাবমেরিন মাসের পর মাস সমুদ্রের নিচে নিঃশব্দে অবস্থান করতে পারে, যা ভারতের সেকেন্ড স্ট্রাইক ক্ষমতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।
ভারতের নিরাপত্তা যে কেবল স্থল বা আকাশেই সীমাবদ্ধ নয়, তা আবারও স্পষ্ট হয়ে গেল। আজ দেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে সমুদ্রের গভীর নীল জলরাশির নিচেও।
প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন ১: K-4 মিসাইলের পাল্লা কত?
উত্তর: K-4 মিসাইলের কার্যকর পাল্লা প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটার।
প্রশ্ন ২: এই মিসাইল কোন সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণ করা হয়েছে?
উত্তর: INS অরিঘাট থেকে K-4 মিসাইলের সফল পরীক্ষা করা হয়েছে।
প্রশ্ন ৩: K-4 মিসাইলের ‘K’ কী বোঝায়?
উত্তর: ‘K’ অক্ষরটি এপিজে আব্দুল কালামের নাম থেকে নেওয়া।
প্রশ্ন ৪: এই মিসাইল ভারতের কোন প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ?
উত্তর: এটি ভারতের নিউক্লিয়ার ট্রায়াড ও সেকেন্ড স্ট্রাইক কৌশলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
প্রশ্ন ৫: কেন সাবমেরিন-লঞ্চড মিসাইল গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: কারণ এগুলি গোপনে অবস্থান করে শত্রুর আক্রমণের পরও পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা দেয়।

