শেষ ইচ্ছার কথাই যেন এখন সবচেয়ে বেশি নাড়া দিচ্ছে সবাইকে। ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে শোকের আবহ নেমে এসেছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়।
সাত দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে বৃহস্পতিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাদি। তার গ্রামের বাড়িতে এখন নীরব কান্না আর দীর্ঘশ্বাস। চেনা-অচেনা মানুষের ভিড়ে মুখর হলেও বসতভিটায় হাদির শূন্যতা স্পষ্ট।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, জীবদ্দশায় হাদির ইচ্ছা ছিল তাকে তার বাবার কবরের পাশেই সমাহিত করা হোক। তবে দাফনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। নিহত হাদির ভগ্নপতি আমীর হোসেন বলেন, বাবার কবরের পাশেই চিরনিদ্রায় শায়িত হওয়ার কথা তিনি পরিবারের কাছে একাধিকবার বলেছেন।
১৯৯৩ সালে নলছিটি পৌরসভার খাসমহল এলাকায় একটি সাধারণ টিনশেড ঘরে জন্ম হাদির। বাবা মাওলানা আবদুল হাদি ও মা তাসলিমার ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। গ্রামেই বেড়ে ওঠা এই যুবক ছোটবেলা থেকেই প্রতিবাদী মানসিকতার পরিচয় দেন।
নেছারাবাদ এন.এস. কামিল মাদরাসা থেকে দাখিল ও আলিম সম্পন্ন করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। এলাকাবাসীর ভাষায়, হাদি শুধু একজন মানুষ নন, বরং চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া এক প্রতীক।
শুক্রবার সকাল থেকেই তার বাড়িতে ভিড় করছেন মানুষজন। কেউ স্মৃতিচারণ করছেন, কেউ আবার এই হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার দাবি তুলছেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায় গণসংযোগকালে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে গুলি করা হয় হাদিকে। মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত জীবন রক্ষা করা যায়নি।
প্রশ্ন ও উত্তর
হাদির শেষ ইচ্ছা কী ছিল?
বাবার কবরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন তিনি।
হাদি কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাসমহল এলাকায়।
কবে ও কোথায় তাকে গুলি করা হয়?
১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগর এলাকায়।
হাদি কোন সংগঠনের মুখপাত্র ছিলেন?
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন তিনি।
হাদির হত্যাকাণ্ডে পরিবারের দাবি কী?
দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার।

