তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাতুরে একগুচ্ছ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনায় প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল শ্রী বনোয়ারীলাল পুরোহিত জি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পালানিস্বামী জি, উপমুখ্যমন্ত্রী শ্রী ওপিএস, আমার সহকর্মী প্রহ্লাদ যোশী জি, তামিলনাড়ু সরকারের মন্ত্রী শ্রী ভেলুমনি জি, উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ভদ্রমহোদয়া ও ভদ্র মহোদয়গণ।

ভানাক্কাম,

কোয়েম্বাতুরে এসে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এটি শিল্প ও উদ্ভাবনের শহর। আজ আমরা যে সব উন্নয়নমূলক প্রকল্প শুরু করছি, তার ফলে কোয়েম্বাতুর এবং পুরো তামিলনাড়ুর কল্যাণ হবে।

বন্ধুগণ,

ভবানী সাগর জলাধারের আধুনিকীকরণের জন্য শিলান্যাস করা হচ্ছে। এর ফলে ২ লক্ষ একরের বেশি জমিতে সেচের ব্যবস্থা হবে। ইরোড, ত্রিরুপ্পুর এবং কারুর জেলা এই প্রকল্প থেকে বিশেষ ভাবে উপকৃত হবে। এই প্রকল্প আমাদের কৃষকদের জন্য অনেক সুবিধে নিয়ে আসবে। মহান থিরুভাল্লুভারের উক্তির কথা মনে পড়ছে। তিনি বলেছিলেন :

কৃষকরাই হল সেই মানুষ, যারা জীবনের প্রকৃত প্রতীক আর সকলে তাঁদের জন্যই বেঁচে রয়েছেন; কৃষকদের আরাধনা করুন।

বন্ধুগণ,

তামিলনাড়ু ভারতের শিল্প বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। যে কোনো শিল্পের বিকাশের মূল চাহিদা হল নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, দুটি বৃহৎ বিদ্যুৎ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করছি এবং আরেকটি বিদ্যুৎ প্রকল্পের শিলান্যাস করবো। তিরুনেলভেলী, থুঠুকড়ি, রামানাথপুরম এবং বিরুধুনগর জেলায় নেভেলি লিগনাইট কর্পোরেশন ইন্ডিয়া লিমিটেড ৭০৯ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প তৈরি করেছে। এই প্রকল্প রূপায়ণে খরচ হয়েছে ৩০০০ কোটি টাকা। এনএলসি –র আরেকটি ১০০০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ প্রকল্প প্রায় ৭৮০০ কোটি টাকায় নির্মিত হয়েছে। এই প্রকল্পে তামিলনাড়ু সব থেকে উপকৃত হবে। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ-এর ৬৫ শতাংশ তামিলনাড়ু পাবে।

আরও পড়ুন -  তামিলনাডুতে ডাঃ এমজিআর চিকিৎসা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৩তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

বন্ধুগণ,

তামিলনাড়ুর সামুদ্রিক বাণিজ্য ও বন্দর ভিত্তিক উন্নয়নের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। থুঠুকড়ির ভিও চিদাম্ববরনার বন্দরের বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করে আমি আনন্দিত। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামী ভি –ও –সি’র উদ্যোগের কথা আমরা স্মরণ করি। ভারতে প্রাণবন্ত জাহাজ শিল্প এবং সমুদ্র বাণিজ্যের উন্নয়নে তাঁর ভাবনা আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আজ যে প্রকল্পগুলির সূচনা হল, তার ফলে এই বন্দরে পণ্য ওঠানো – নামানোর কাজে সুবিধা হবে। এমনকি এর ফলে পরিবেশবান্ধব বন্দরের উদ্যোগকেও সাহায্য করা যাবে। এছাড়াও এই বন্দরকে পূর্ব উপকূলের বৃহৎ জাহাজ বদল করার সুবিধাযুক্ত বন্দরে পরিণত করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। যখন আমাদের বন্দরগুলি দক্ষভাবে কাজ করে, তখন আত্মনির্ভর ভারত এবং ব্যবসা – বাণিজ্য ও লজিস্টিকের আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হয়ে উঠতে সেটি সাহায্য করে।

কেন্দ্র, সাগারমালা প্রকল্পের মাধ্যমে বন্দর ভিত্তিক উন্নয়নের বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০১৫ থেকে ২০৩৫ এই সময়কালে ৬ লক্ষ কোটি টাকার ৫৭৫টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রকল্পগুলি হল – বন্দরের আধুনিকীকরণ, নতুন বন্দর নির্মাণ, বন্দরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, বন্দর ভিত্তিক শিল্পায়ন এবং উপকূলবর্তী এলাকায় বসবাসরত মানুষদের উন্নয়ন।

আরও পড়ুন -  ২১০ টি গোল দেবঃ খাদ্যমন্ত্রী

চেন্নাইয়ের শ্রীপেরুম্বুদুরের কাছে মাপ্পেরুতে একটি নতুন মাল্টি মডাল লজিস্টিক পার্ক শীঘ্রই শুরু হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। ৮ লেনের কোরামপাল্লাম সেতু এবং রেল লাইনের উপর উড়ালপুলের কাজটি সাগরমালা প্রকল্পের মাধ্যমে করা হয়েছে। বন্দরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই প্রকল্প যানজটমুক্ত করতে সাহায্য করবে। এর ফলে জাহাজ থেকে পণ্য গাড়িতে মজুত করার সময়ও কম লাগবে।

বন্ধুগণ,

উন্নয়ন ও পরিবেশের যত্ন নেওয়ার বিষয়টি পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত। ভি – ও – সি বন্দর ইতিমধ্যেই ৫০০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য রুফটপ সৌরশক্তি উৎপাদনের যন্ত্রাংশ বসিয়েছে। আরো ১৪০ কিলোওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরশক্তি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভি – ও – সি বন্দর ৫ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পের সঙ্গে গ্রিডের সংযোগ গড়ে তুলেছে। এই প্রকল্পটি বন্দরের ব্যবহারযোগ্য বিদ্য়ুৎএর ৬০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এটি জ্বালানী ক্ষেত্রে আত্মনির্ভরতার প্রকৃত উদাহরণ।

প্রিয় বন্ধুগণ,

যে কোনো উন্নয়নের মূলে রয়েছে ব্যক্তি বিশেষের মর্যাদা নিশ্চিত করা। প্রত্যেকের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হলে সকলের জন্য বাসস্থানের প্রয়োজন। আমাদের নাগরিকদের স্বপ্ন ও উচ্চাকাঙ্খা পূরণে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সূচনা হয়েছিল।

আরও পড়ুন -  Narendra Modi: জাতীয় সংগীত গাইলেন নরেন্দ্র মোদি, কোহলি-রোহিতের পাশে দাঁড়িয়ে, ভাইরাল ভিডিও

বন্ধুগণ,

৪১৪৪টি ঘর বস্তিবাসীদের জন্য উদ্বোধন করার সুযোগ আমি পেয়েছি। তিরুপ্পুর, মাদুরাই এবং তিরুচিরাপল্লী জেলায় এগুলি তৈরি করা হয়েছে। এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩৩২ কোটি টাকা। স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৭০ বছর কেটে গেলেও যারা নিজেদের মাথার উপর ছাদ পান নি, এই বাড়িগুলি তাদের হস্তান্তরিত করা হবে।

বন্ধুগণ,

তামিলনাড়ু একটি নগর প্রধান রাজ্য। কেন্দ্র ও তামিলনাড়ু সরকার, এই শহরগুলির সব রকমের উন্নয়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। তামিলনাড়ু জুড়ে স্মার্ট সিটিগুলিতে ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের শিলান্যাস করতে পেরে আমি আনন্দিত। এর ফলে এই শহরগুলির বিভিন্ন পরিষেবা মেধা ও সুসংহত তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে দেওয়া যাবে।

বন্ধুগণ,

আমি নিশ্চিত যে, আজ যে প্রকল্পগুলির সূচনা হয়েছে, সেগুলি তামিলনাড়ুর জনসাধারণের জীবন ও জীবিকার জন্য সহায়ক হবে। আজ যারা নতুন বাড়ি পেলেন, সেই পরিবারগুলিকে শুভেচ্ছা জানাই। মানুষের স্বপ্ন পূরণে এবং আত্মনির্ভর ভারত গড়ার কাজে আমরা নিয়োজিত থাকবো।

ধন্যবাদ

অনেক অনেক ধন্যবাদ
ভানাক্কাম !!
সূত্র – পিআইবি।