গত পাঁচ বছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলিতে যে পরিমাণ ঋণ রাইট অফ হয়েছে, তা পৌঁছে গিয়েছে ৬.১৫ লক্ষ কোটি টাকায়—এমনই জানিয়েছে কেন্দ্র সরকার সংসদে।
বিরোধীদের অভিযোগ, কর্পোরেট ঋণ মকুবের ধারাই যেন ক্রমশ বাড়ছে। সাধারণ মানুষ ন্যূনতম ব্যালান্স না রাখতে পারলে জরিমানার বোঝা বইছেন, অথচ বড় কর্পোরেট সংস্থার ক্ষেত্রে রাইট অফের হার লাফিয়ে বাড়ছে—এ কথাই আবার সামনে এনে দিয়েছে সরকারি তথ্য।
রিজার্ভ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, গত পাঁচটি অর্থবর্ষ এবং চলতি অর্থবর্ষের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি মোট ৬.১৫ লক্ষ কোটি টাকার ঋণ রাইট অফ করেছে। এর বড় অংশই কর্পোরেট ঋণ। তবে অর্থমন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী জানিয়েছেন, রাইট অফ মানেই ঋণ মকুব নয়; ঋণগ্রহীতা এখনও টাকা ফেরত দিতে বাধ্য।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে আদায়ের হার নিয়ে। সরকারি হিসেব বলছে, পাঁচ বছরে মোট রাইট অফ লোনের মধ্যে আদায় হয়েছে মাত্র ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। ফলে বাকি বিপুল পরিমাণ অর্থের কী হবে, তা নিয়েও উদ্বেগ বাড়ছে।
সবচেয়ে বেশি রাইট অফ হয়েছে ২০২০–২১ অর্থবর্ষে—মোট ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা। পরের বছর তা কমে দাঁড়ায় ১.১৬ লক্ষ কোটিতে। তবে ২০২২–২৩ সালে ফের বৃদ্ধি পেয়ে রাইট অফ পৌঁছেছে ১.২৭ লক্ষ কোটিতে।
এত বড় অঙ্কের রাইট অফ সত্ত্বেও সরকার দাবি করছে, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য আগের চেয়ে ভালো। লাভ বাড়ছে, মূলধনের ভিতও নাকি মজবুত হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য, তাই ২০২২–২৩ থেকে ব্যাংকগুলিকে আর অতিরিক্ত মূলধন জোগান দিতে হয়নি।
তবে বিরোধীদের প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—কর্পোরেট ঋণের বোঝা কি শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের কাঁধেই পড়ে যাচ্ছে?
১. রাইট অফ কি ঋণ মকুবের সমান?
না, রাইট অফ মানে ঋণ বাতিল নয়; ব্যাংক ভবিষ্যতে সেই টাকা আদায়ের চেষ্টা চালাতে পারে।
২. পাঁচ বছরে মোট কত ঋণ রাইট অফ হয়েছে?
মোট রাইট অফের পরিমাণ ৬.১৫ লক্ষ কোটি টাকা।
৩. কত টাকা আদায় করতে পেরেছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলি?
আদায় হয়েছে মাত্র ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা।
৪. কোন অর্থবর্ষে সবচেয়ে বেশি রাইট অফ হয়েছে?
২০২০–২১ অর্থবর্ষে, মোট ১.৩৩ লক্ষ কোটি টাকা।
৫. সরকার ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে কী দাবি করছে?
সরকার বলছে, ব্যাংকের লাভ ও মূলধন শক্তি বেড়েছে, তাই অতিরিক্ত মূলধন দেওয়া হয়নি।

