AI-171 বিমান দুর্ঘটনা: ল্যান্ডিং গিয়ার নাকি ইঞ্জিন বিকলতা? অভিজ্ঞ পাইলটের বিশ্লেষণে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

Published By: Khabar India Online | Published On:

AI-171 বিমান দুর্ঘটনা: ল্যান্ডিং গিয়ার নাকি ইঞ্জিন বিকলতা? অভিজ্ঞ পাইলটের বিশ্লেষণে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য।

ভারতের আকাশে আবারও রক্তাক্ত ইতিহাস। আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করা এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট AI-171 উড়ানে ওঠার মাত্র ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই ভেঙে পড়ে একটি হাসপাতালের হোস্টেলের উপর। মৃত্যু হয়েছে বিমানের ২৪১ জন যাত্রী ও কর্মী সহ আরও ৩৮ জন নিরীহ সাধারণ মানুষের। আহত অন্তত ৬০ জন। এই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা দেশের নাগরিকদের স্তম্ভিত করেছে।

এবার এই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ নিয়ে মুখ খুললেন এক প্রাক্তন অভিজ্ঞ বাণিজ্যিক পাইলট। তাঁর বিশ্লেষণে উঠে এসেছে একাধিক গাফিলতির ইঙ্গিত।

কী ঘটেছিল সেই মুহূর্তে?
বিমানটি বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার মডেলের। আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে টেকঅফের ঠিক ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই, মাত্র ৬০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছে তা ভেঙে পড়ে। ঘটনার পরেই জানা যায়, উড়ানে ওঠার ৬০ সেকেন্ডের মধ্যেই ‘মেডে’ সংকেত পাঠানো হয়েছিল বিমানের তরফে, যার অর্থ, ইমারজেন্সি অবস্থা।

আরও পড়ুন -  United States: চীনকে নাক না গলানোর হুশিয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের, ভারতের সঙ্গে সামরিক মহড়া নিয়ে

পাইলটের চাঞ্চল্যকর দাবি
প্রাক্তন পাইলটের মতে, টেকঅফের পর নির্ধারিত সময়ে ল্যান্ডিং গিয়ার তুলতে ব্যর্থ হন পাইলট বা কো-পাইলট। সাধারণত ১০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পরই গিয়ার উঠিয়ে নেওয়া হয় যাতে অতিরিক্ত ড্র্যাগ না হয়। কিন্তু দুর্ঘটনার সময়কার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, ৪০০ থেকে ৬০০ ফুট উচ্চতাতেও গিয়ারটি নিচে ছিল।

এছাড়া উইং ফ্ল্যাপও হয়তো আগেভাগেই রিট্র্যাক্ট করে ফেলা হয়, যার ফলে বিমানের লিফট কমে যায় এবং ইঞ্জিনের ওপর চাপ বেড়ে যায়। এতে ইঞ্জিন থ্রাস্টও কমে যেতে পারে, যা বিমানের ভারসাম্য হারানোর কারণ হতে পারে বলে ধারণা।

আরও পড়ুন -  Indian Railways: রেল যাত্রীদের জন্য সুখবর, এবার রোগীদের জন্য টিকিটে ৭৫ শতাংশ ছাড়!

কো-পাইলটের ভুল নাকি যান্ত্রিক ত্রুটি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কো-পাইলট ভুল করে গিয়ার তোলার পরিবর্তে ফ্ল্যাপ কন্ট্রোল অ্যাকটিভেট করে ফেলতে পারেন। আবার গিয়ার মেকানিজমেও থাকতে পারে যান্ত্রিক ত্রুটি। এমনকি বিমানের দু’টি ইঞ্জিনের এক বা উভয়টিই হয়তো টেকঅফের সময় বিকল হয়ে পড়ে, যা এই মারাত্মক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তদন্তের অগ্রগতি কী?
ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার উদ্ধার হয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত ককপিট ভয়েস রেকর্ডারের খোঁজ মেলেনি। ভারতের এয়ারক্র্যাফ্ট অ্যাক্সিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (AAIB) ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সহায়তায়। DGCA জরুরি ভিত্তিতে দেশের সমস্ত বোয়িং ৭৮৭ বিমানের তদারকির নির্দেশ দিয়েছে।

আরও পড়ুন -  ১০৮ টি শিব মন্দির

এখনও বহু প্রশ্নের উত্তর বাকি
AI-171 দুর্ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত রিপোর্ট এখনও প্রকাশিত হয়নি। তবে প্রাথমিক বিশ্লেষণেই যে একাধিক প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও মানবিক ভুলের ইঙ্গিত মিলছে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞ মহলে জোর চর্চা চলছে। এই ট্র্যাজেডি ভারতের বিমান চলাচল ইতিহাসে দীর্ঘদিন ধরে এক গভীর দাগ রেখে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

এই ধরনের দুর্ঘটনা ভবিষ্যতে যাতে আর না ঘটে, তার জন্য বিমান চলাচলের প্রতিটি ধাপে আরও কঠোর নজরদারি ও প্রযুক্তিগত আপডেট প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।