অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমীরণ দে তাকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্য তিনি ঋণী

Published By: Khabar India Online | Published On:

টুঙ্কা সাহা, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, আসানসোলঃ গত ২০ নভেম্বর হনুমানের তাড়া খেয়ে প্রাণ ভয়ে ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে মেরুদণ্ডে গুরুতর আঘাত পায় বারাবনির ভানোড়া অঞ্চলের বাসিন্দা চৈতালি বাউরি (৩০) ৷ এরপর পরিবারের সদস্যরা চৈতালিকে চিকিৎসার জন্যে তাড়াতাড়ি আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে ৷ যেখানে অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমীরণ দে পরীক্ষা করে দেখেন, রোগীর মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৷ পাশাপাশি নার্ভের ওপরেও চাপ পড়েছে ৷ এরফলে রোগীর ডান পা অবশ হয়ে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি বাঁ পায়ের অবস্থাও খারাপ থাকায় রোগী চলা ফেরার অবস্থায় নেই ৷ তাড়াতাড়ি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন ৷ নাহলে রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হবে ৷ সাধারণত এই ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার এতদিন জেলা হাসপাতালে করা হয়নি ৷ আবার রোগী পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভালো না থাকায় অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমীরণ দে সিদ্ধান্ত নেন জেলা হাসপাতালেই তিনি অস্ত্রোপচার করবেন ৷ সেই অনুসারে বিষয়টি আসানসোল জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাসকে জানানো হয় ৷

আরও পড়ুন -  ট্রেন চালানোর দাবিতে সাধারণ মানুষের রেল অবরোধ, স্টেশনে দাঁড়িয়ে গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন

তিনি চিকিৎসককে সমস্ত রকম সহযযোগীতার আশ্বাস দেন। পাশাপাশি অস্ত্রোপচার সফল করতে দুই অ্যানাসথেসিস্ট ডাক্তার মাধব মণ্ডল ও ডাক্তার সুকন্যা রায়কে নিয়ে একটি টিমও গড়ে তোলা হয় ৷ অস্ত্রোপচারের দিন ধার্য করা হয় বৃহস্পতিবার ৷ ওই দিন প্রায় ১ ঘন্টা ২০ মিনিট ধরে রোগীর শিরদাঁড়ায় অস্ত্রোপচার করা হয় ৷ এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে রোগীর জ্ঞান ফেরে ৷ এই বিষয়ে রোগী চৈতালি বাউরি জানিয়েছেন, অস্থি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সমীরণ দে তাকে নতুন জীবন দেওয়ার জন্যে তিনি ঋণী ৷

আরও পড়ুন -  Indian Railways: ভারতে ট্রেনে একদম বিনামূল্যে ভ্রমণের সুযোগ! জেনে নিন কারা এই সুবিধা পান

অন্যদিকে চিকিৎসক সমীরণ দে জানিয়েছেন, রোগী পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিলোনা ৷ বেসরকারি ক্ষেত্রে এই ধরণের অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা খরচ হয়ে থাকে ৷ তাছাড়া বাংলার কোনো জেলা হাসপাতালেই এই ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচার করা হয় না ৷ সাধারণ ক্ষেত্রে এগুলি মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ তবে জেলা হাসপাতালের সুপার পূর্ণ সহযোগীতার আশ্বাস দেওয়ায় পরেই তিনি এই অস্ত্রোপচার করতে রাজি হয়ে যান ৷ বর্তমানে রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল ৷ অন্যদিকে জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাস জানিয়েছেন, এতদিন পর্যন্ত এই ধরণের ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারগুলি বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ বা কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হতো। তবে চিকিৎসক সমীরণ দে’র মানসিক আস্থা দেখে জেলা হাসপাতালেই এই ধরণের অস্ত্রোপচারে রাজি হয়ে যাই ৷ শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার মেরুদণ্ডের সফল অস্ত্রোপচার সম্ভব হওয়ার ফলে সাধারণের কাছে এক অভয় বার্তা গেল ৷ পাশাপাশি আসানসোল জেলা হাসপাতালও চিকিৎসা পরিষেবার ক্ষেত্রে এক নতুন দিগন্ত ছুঁয়ে ফেলেছে ৷

আরও পড়ুন -  মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫৭, জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে