সাধন মণ্ডল, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, বাঁকুড়াঃ বৈধব্য বেশ পরিত্যাগ করে আজ আবার চৌদ্দ বছর পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন রাইপুরের আরতি কর (পরিবর্তিত নাম)পাত্র হুগলির আর্য চক্রবর্তী । উল্লেখ্য আরতি দেবি আজ থেকে চৌদ্দ বছর আগে দুরারোগ্য ক্যান্সারে স্বামীকে হারিয়েছেন তারপর থেকেই একমাত্র কন্যাকে নিয়ে বাপের বাড়িতেই ছিলেন। বর্তমানে তিনি ও তার পরিবার রাইপুর মদন গোপাল জীউ কৃষ্ণ মন্দিরে ( ইসকন) সাথে যুক্ত থাকায় সপরিবারে মন্দিরে নিত্যদিন আসা-যাওয়া করতে থাকেন। অন্যদিকে আর্য চক্রবর্তী ও হুগলির ইসকন মন্দিরের সাথে যুক্ত থাকায় দুজনের বৈধব্য জীবন সম্পর্কে জানতে পারেন রাইপুর ইসকন মন্দিরের মন্দিরের সেবক রসময়ানন্দজী মহারাজ । তারপর তিনিই উভয় পরিবারের সাথে কথা বলেন তাঁদের আরও একটি নতুন জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য।
মহারাজ বলেন আমি আর্য বাবুর ছেলের সাথে কথা বলি তাতে আর্য বাবুর ছেলে সম্মতি দেয় ও পরিবারের লোকজন সম্মতি দেন এরপর আমিআরতী দেবীর বাড়িতে তার পরিবারের সাথে কথা বলি তাতে পরিবার এবং আরতিদেবী সম্মতি প্রকাশ করলে বিয়ের ব্যবস্থা করি। তাই আজ রাইপুর মদন গোপাল জিউ ইসকন মন্দিরে তাদের চার হাত এক করে দিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। দ্বিতীয়বার বিয়ে করা প্রসঙ্গে আর্য চক্রবর্তী বলেন বিধবা বলে কিছুই হয়না উনি তার প্রিয়জনকে হারিয়েছেন আমি ও আমার প্রিয় জন কে হারিয়েছি আবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় আমরা দুটি পরিবার মিলিত হলাম আগামী দিনে আমরা পুত্র-কন্যা নিয়ে সুখে থাকবো।
এদিকে বাবা হারানো মনামী এবং মা হারানো অতনু দুজনেই শুভ বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আনন্দ উপভোগ করছে। মনামী বলে আমি বাবা পেলাম আর অতনু বলে আমি মা পেলাম আমরা ভাই বোন হয়তো কোন এক জীবনে ভাই বোন ছিলাম তাই শ্রীকৃষ্ণের ইচ্ছায় আবার আমরা মিলিত হলাম।। বিবাহ অনুষ্ঠানে উভয় পরিবারের লোকজন উপস্থিত ছিলেন এছাড়া রায়পুরের বিশিষ্টজনরাও উপস্থিত থেকে বিয়ে বাড়ির আনন্দ উপভোগ করেন। বিয়ে বাড়িতে আসা রাইপুরের বিশিষ্ট সমাজসেবী গৌতম বিশ্বাস ও শ্যামলী বিশ্বাস বলেন আমরা আমাদের জীবনে এই ধরনের নজির সৃষ্টি করা ঘটনা এই প্রথম দেখলাম। জঙ্গলমহলের বুকে এই এক অনন্য নজির গড় হল যার মূল উদ্যোক্তা রাইপুর ইসকন মন্দিরের সেবাইত রসময়ানন্দ জি মহারাজ প্রভু। বিধবা বিবাহ অনুষ্ঠান রাইপুরে নজির হয়ে থাকল।