শ্রমক্ষেত্রে নজিরবিহীন সংস্কারগুলি কার্যকর করার লক্ষ্যে

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাছ থেকে মতামত, পরামর্শ ও আপত্তি সংক্রান্ত বিষয়ে প্রস্তাব আহ্বান করে বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত ২০২০ বিধির আওতায় খসড়া আইন বিজ্ঞাপিত করেছে। খসড়া এই আইন সম্পর্কে মতামত, পরামর্শ বা আপত্তি বিজ্ঞাপিত হওয়ার দিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে পাঠানো প্রয়োজন।

২০২০-র কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত বিধিটি কার্যকর করতে খসড়া এই আইন সম্পর্কে মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। এই বিধির আওতায় বন্দর কর্মী, ভবন ও অন্যান্য নির্মাণ কর্মী, খনি শ্রমিক, আন্তঃরাজ্য প্রবাসী শ্রমিক, ঠিকা শ্রমিক, কর্মরত সাংবাদিক, অডিও-ভিস্যুয়াল ক্ষেত্রের কর্মী এবং সেলস-এর কাজে যুক্ত কর্মীদের কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও আদর্শ পরিবেশ বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে। খসড়া এই আইনে আরও যে সমস্ত বিষয়ের কথা উল্লেখ রয়েছে সেগুলি নিম্নরূপ :

. আইনটি কার্যকর হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই নিয়োগপত্র পাঠাতে হবে যেখানে সংশ্লিষ্ট কর্মীর পদ, দক্ষতার ভিত্তিতে বিভাজন, মজুরি, উচ্চহারে মজুরির পন্থা বা পদোন্নতি সংক্রান্ত বিবরণ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।

আরও পড়ুন -  Santosh Trophy Football: প্রথম ম্যাচে পয়েন্ট হারালো, বাংলার ছেলেরা

. সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তা তাঁর কর্মচারীদের বার্ষিক ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করবেন। ইতিমধ্যেই যে সমস্ত কর্মীর বয়স ৪৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাঁরা অগ্রাধিকার পাবেন।

. খসড়া আইনটিতে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভাতা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একইসঙ্গে, আন্তঃরাজ্য প্রবাসী শ্রমিকদের যাবতীয় উদ্বেগ ও অভিযোগ সময়মতো সমাধানে হেল্পলাইন চালু করার কথাও বলা হয়েছে।

. খসড়া আইনটিতে একক বৈদ্যুতিন ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন, লাইসেন্স এবং বার্ষিক রিটার্ন দাখিলের কথা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের জন্য উল্লেখ রয়েছে। ঠিকাদার জন্য যাঁরা একটির বেশি রাজ্য ঠিকা শ্রমিক সরবরাহ বা কাজে নিয়োগ করে থাকেন, তাঁদের সুবিধার্থে সর্বভারতীয় স্তরে একক লাইসেন্স প্রক্রিয়া চালু করার কথা বলা হয়েছে।

. খসড়া আইনটিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মূল বা প্রধান কাজকর্মে ঠিকা শ্রমিকদের কাজে লাগানো যাবে না বলে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আরও বলা হয়েছে, ২০২০-র কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সংক্রান্ত বিধিতে গৌণ বা অপ্রধান কর্মকাণ্ডগুলির বিষয়ে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।

আরও পড়ুন -  আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে বন্যপ্রাণীর আক্রমণ !

. ঠিকা শ্রমিকদের মজুরির বিষয়ে খসড়া আইনে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার তাঁদের মজুরি স্থির করলেও মজুরি না মেটানোর ক্ষেত্রে সময়সীমা এক মাসের বেশি হবে না। এমনকি, কোনও প্রতিষ্ঠানে ঠিকা শ্রমিক হিসেবে নিযুক্ত কোনও ব্যক্তিকে শেষ মজুরি প্রদানের দিন থেকে পরবর্তী সাত মাস পূর্ণ হওয়ার আগেই বকেয়া মজুরি মিটিয়ে দিতে হবে। এই মজুরি ব্যাঙ্ক অথবা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে মেটানো যেতে পারে।

. ৫০০ বা তার অধিক কর্মী রয়েছেন এমন প্রতিষ্ঠানে কর্মীদের সুরক্ষার জন্য সেফটি কমিটি গঠন করতে হবে যাতে প্রত্যেক কর্মীর কর্মস্থলে সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা যায়।

. খসড়া এই আইনে মহিলা কর্মীদের স্বার্থ সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে, সকাল ৬টার আগে এবং সন্ধ্যা ৭টার পরে কর্মস্থলে কাজে নিয়োজিত রাখার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট মহিলা কর্মচারীর অনুমতি নিতে হবে।

আরও পড়ুন -  Pension Scheme: ভারত সরকারের পেনশন স্কিম, প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা পেতে পারেন, জানুন বিস্তারিত

. যে কোনও একটি দিনে ওভারটাইমের হিসেবের ক্ষেত্রে একটি ঘন্টার ভগ্নাংশ ১৫-৩০ মিনিটের মধ্যে বিবেচ্য হবে, অর্থাৎ সেই ওভারটাইমের সীমা ৩০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে। বর্তমানে ৩০ মিনিটের কম সময়ে কোনও অভারটাইম নেই।

. খনি সংক্রান্ত আইনটিও আরও শিথিল করা হয়েছে। এক্ষেত্রে খনি শ্রমিকদের কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের অনুকূল পরিবেশের বিষয়টিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

. খসড়া আইনে এই সমস্ত বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে যে কোনও প্রতিষ্ঠানে প্রত্যেক কর্মীর সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মস্থলে অনুকূল পরিবেশের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি, ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে কর্মীদের উপস্থিতি সংক্রান্ত রেজিস্টার রক্ষণাবেক্ষণ, সেগুলি রেকর্ড বা নথিভুক্ত করা তথা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সংশোধিত রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রেও এই খসড়া আইন কার্যকর হলে শ্রমিক এবং নিয়োগকারী – উভয় পক্ষই সমান লাভবান হবেন। সূত্র – পিআইবি।