নিজস্ব সংবাদদাতা, গোসাবাঃ গোসাবায় তৃণমূল নেতা খুনের ঘটনায় গ্রেফতার ৮, খুনের নেপথ্যে গোষ্ঠী কোন্দল দাবী নিহতের পরিবারের।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ফলে আক্রান্ত হচ্ছে তৃণমূল।রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, মাথার ওপর তৃণমূলের হাত থাকলে কি পুলিশকে আর ভয় করছে না দুষ্কৃতীরা? তাই কি তৃণমূলের হাতেই খুন হতে হচ্ছে একের পর এক তৃণমূল নেতাকে?
দুষ্কৃতীরা কি জানে কাউকে খুশি করতে পারলে আর কোনও ভয় নেই? জয়নগর, আমডাঙার পর এবার গোসাবা। পথশ্রীর রাস্তা তৈরি করাকে কেন্দ্র করে অশান্তিতে উত্তেজনা ছড়াল দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবার রাধানগর এলাকায়। নিহত তৃণমূল নেতার নাম মুসাকলি মোল্লা। নিহত তৃণমূল নেতার রাধানগর তারানগর এলাকার বুথ সভাপতি। এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার গোসাবা ব্লকের সুন্দরবন পোস্টাল থানার অন্তর্গত রাধানগর তারানগর গ্রামে।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোমবার এলাকায় রাস্তাশ্রী প্রকল্পের একটি রাস্তা তৈরি হচ্ছিল। সেখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বুথ সভাপতি মুসাকালি। এই নিয়ে তৃণমূলের অপর গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর বিবাদ বাঁধে। গণ্ডগোলের মধ্যেই মুছাকলি মোল্লাকে মারধর শুরু করে একদল দুষ্কৃতী।
লাঠি লোহার রড ও বাঁশের মুগুর দিয়ে পেটানো হয় তাঁকে।এমনকি বাঁশের মুগুর দিয়ে নিহত তৃণমূল নেতার মাথায় আঘাত করা হয়। এরপর ঘটনাস্থলে অচৈতন্য পড়ে নিহত ঐ তৃণমূল নেতা। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি আহত এই তৃণমূল নেতাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে আঘাত গুরুতর থাকায় কলকাতায় একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। কলকাতায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় মুছাকালি মোল্লার। এই ঘটনা তদন্ত নেমে ইতিমধ্যেই সুন্দরবন উপকূল থানার পুলিশ ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। নিহত তৃণমূল পরিবারের দাবি তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে খুন হতে হল মুসাকলি মোল্লার। নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রী তানজিলা মোল্লা জানান, আমার স্বামী মাদার তৃণমূল করতেন। আক্রমণকারীরা যুব তৃণমূলের সদস্য।
রাস্তা তৈরিতে কম সামগ্রী দেওয়ায় প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী। তাই তারা মাথায় মুগুর মেরে দেহ জলে ফেলে দিয়েছে । এই ঘটনার সঙ্গে বাকিবুর আর তাঁর দলবল জড়িত আছে। বাকিবুর গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মন্ডল ঘনিষ্ঠ। নিহত তৃণমূল নেতার ছেলে মোর সেলিম মোল্লার দাবি, আমার বাবা তৃণমূলের মাদার দল করতো আর যারা আমার বাবাকে মেরেছে, তারা যুব তৃণমূল করে। আমার বাবা দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের উপাধ্যক্ষ অনিমেষ মন্ডল ঘনিষ্ঠ আর যারা আমার বাবাকে মেরেছে তারা গোসাবার বিধায়ক সুব্রত মন্ডল ঘনিষ্ঠ। তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরেই আমার বাবাকে খুন হতে হলো। এই খুনের সঙ্গে জড়িত যারা রয়েছে তাদেরকে শাস্তি চাই আমরা।