নিজস্ব সংবাদদাতা, দক্ষিণ ২৪ পরগণাঃ কথিত আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। মা দুর্গার বিসর্জন হতে না হতেই প্রত্যেকটা বাঙালির ঘরে শুরু হয়ে যায় কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর তোড়জোড়।
বাঙালির যে বারো মাসে তেরো পার্বণ সেই পূজা-পার্বণের দিন শুরু হয়ে গেছে দুর্গা পুজো থেকেই। আশ্বিন মাসের শরৎ কাল থেকেই বাঙালির উৎসবের মরশুম শুরু।
কোজাগরী শব্দটির উৎপত্তি ‘কো জাগতী’ থেকে। যার অর্থ ‘কে জেগে আছো’ পূরাণে কথিত আছে, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোর দিন মা মর্ত্যে আসেন। সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আশীর্বাদ দেন। কিন্তু যে বাড়ির দরজা বন্ধ থাকে, সেই বাড়িতে ধন-দৌলতের দেবী প্রবেশ করেন না। মুখ ফিরিয়ে চলে যান। সেজন্য নাকি রাত জেগে মা লক্ষ্মীর পুজো হয়। আশ্বিন মাসের শেষ পূর্ণিমা তিথিতে সেই পুজো হওয়ায়, কোজাগরী লক্ষ্মী পুজো বলা হয়।
আর এই লক্ষ্মীপূজাকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও গ্রাম থেকে কলা গাছ কেটে নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়।এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকে বারুইপুর, জয়নগর, মগরাহাট ও বিষ্ণুপুর সহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামের বিভিন্ন জমি থেকে কলা গাছ সংগ্রহ করে সঙ্গে সিস ডাব, তীরকাঠি ও বেলপাতা সহ একাধিক নানা ধরনের পূজোর সামগ্রী গ্রাম থেকে শহরের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়।
বিশেষত এই কলাগাছকেই কোজাগরী লক্ষ্মীরূপে পুজো করেন অনেক বাসিন্দা। কোথাও আস্ত কলাগাছকে কাপড় পরিয়ে সাজানো হয়। আবার কেউ কলার বাজরা কেটে নৌকা তৈরি করে তাতে পঞ্চশস্য এবং সোনা-রূপার মুদ্রা রেখে মা লক্ষ্মীর আরাধনা করেন। তাই আজও কলাগাছকে মনে করা হয় বিষ্ণুপ্রিয়া। কোজাগরী লক্ষ্মী পুজোয় তাই কোলকাতায় বহু বাড়িতেই পূজিতা হন কলাগাছরূপী মা লক্ষ্মী।