সিরিয়ালে এসেই হিট দিয়েই বেপাত্তা, কমছে টেলি অভিনেত্রীদের তালিকা কেন?

Published By: Khabar India Online | Published On:

সিরিয়াল (Bengali Serial) ও সিনেমার মধ্যে জনপ্রিয়তা নিয়ে যতই রেষারেষি থাকুক, দুই মাধ্যমই একে অপরের পরিপূরক। ছোটপর্দার অভিনেতা এবং অভিনেত্রীরা সাফল্য পাওয়ার পরে বড়পর্দায় পা রাখেন। এদিকে আবার সিনেমার নায়ক এবং নায়িকারাও মুখ দেখান টিভি ধারাবাহিকে।

দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু দর্শকরা প্রায় অভিযোগ করেন, ধারাবাহিকের আগের আমেজটা যেন হারিয়ে যাচ্ছে। নায়িকাদের নিয়েও ততটা উন্মাদনা এখন আর লক্ষ্য করা যায় না। তাঁরাও আগের মতো সাফল্যের ধারা ধরে রাখতে পারছে না।

উদাহরণ, সন্দীপ্তা সেন এবং মধুমিতা সরকারদের ধরা যাক। দুই অভিনেত্রীই এখন বড় পর্দার নায়িকা। কিন্তু তাঁদের অভিনয় শুরু খ্যাতির সূত্রপাত এই ছোটপর্দার মাধ্যমে। ‘দূর্গা’ সিরিয়ালের হাত ধরে টেলিভিশন স্ক্রিনে মুখ দেখান সন্দীপ্তা। তার প্রথম ধারাবাহিকেই বাজিমাত! সেরা অভিনেত্রী হিসেবে টেলি সম্মান অ্যাওয়ার্ড উঠেছিল হাতে। প্রথম সিরিয়ালের খ্যাতি সেটা হারিয়ে যেতে দেননি সন্দীপ্তা।

আরও পড়ুন -  অনলাইনে পঞ্চদশ ভারত-ইউরোপিয় ইউনিয়ন শিখর সম্মেলনঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্বোধনী ভাষণ

‘টাপুর টুপুর’এও দর্শকরা নতুন রূপে পান তাঁকে। সেই সিরিয়ালও হিট। রাহুল অরুণোদয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘তুমি আসবে বলে’ আজও সিরিয়ালপ্রেমীদের মনে একটি জায়গা দখল করে রেখেছে।

সিরিয়াল থেকে জনপ্রিয়তা পেয়ে সিনেমায় নাম লেখান সন্দীপ্তা। আবার যখন ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’তে মা সারদা হয়ে ফেরেন, দর্শক আবারো মুগ্ধ হয় তাঁর অভিনয়ে।

সন্দীপ্তার ডেবিউয়ের পরেই টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি আরো এক অভিনেত্রীকে পায়। তিনি হলেন মধুমিতা সরকার। সানন্দা টিভির ‘সবিনয় নিবেদন’ দিয়ে তাঁর সফর শুরু। প্রথম সিরিয়ালেই ছাপ ফেলতে সক্ষম হয়েছিলেন। মধুমিতার পরবর্তী সিরিয়ালগুলি তাঁর প্রথম কাজকে ভুলিয়ে দেয়। ‘কেয়ার করি না’, ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’, ‘কুসুম দোলা’ পরপর কাজ করে গিয়েছেন এই অভিনেত্রী।

প্রতিটি ধারাবাহিকই টেলিভিশনের ইতিহাসে নিজের নাম করেছে। ‘বোঝেনা সে বোঝেনা’র পর ‘পাখি’ নামেই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন মধুমিতা। ছোটপর্দার জনপ্রিয়তাকে সঙ্গী করে বড়পর্দায় পা দেন। তারপর সিরিয়ালে ফেরেননি।

আরও পড়ুন -  মা কালীকে সাক্ষী রেখে আরও কাছাকাছি, কাঞ্চনের বাড়ির পুজোয় শ্রীময়ী মধ্যমণি

প্রথম সিরিয়ালেই ছক্কা মারার চলটা পরবর্তী প্রজন্মেও সঞ্চারিত হয়েছে। তবুও একটা ফারাক থেকেই গিয়েছে। এখন যেসব নায়িকারা ডেবিউ ধারাবাহিকেই ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ছাপ ফেলতে সক্ষম হয়েছেন তাদের মধ্যে তৃণা সাহা, সোনামণি সাহা ও তিয়াশা লেপচার নাম করতেই হয়।

‘খোকাবাবু’ তৃণার প্রথম সিরিয়াল। এখানে মজার কাহিনিতে তাঁর অভিনয় দ্রুত নজর কেড়েছিল দর্শকদের। তারপরের ধারাবাহিক ‘কলের বউ’ এক বছরও চলেনি। ফ্লপের পর তৃণার কেরিয়ারে সবথেকে বড় ব্রেক আনে ‘খড়কুটো’। দর্শকদের প্রিয় হয়ে ওঠে ‘গুনগুন’। এরপর আবার একটি ফ্লপ ‘বালিঝড়’। অদ্ভূত ভাবে এখানেও ফেরানো হয়েছিল তৃণা-কৌশিকের জুটি। মুখ ফেরালেন দর্শকরা।

‘দেবী চৌধুরানী’ হয়ে ছোটপর্দায় অভিষেক সোনামণি সাহার। সেই সোনামণিই আবার দর্শকদের কাছে ‘মোহর’ হয়ে উঠতে বেশি সময় লাগে নি। প্রতীক সেনের সঙ্গে তাঁর রসায়ন সুপারহিট। দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ালটি চলার পর শেষ হয়।

আরও পড়ুন -  Sandipta Sen: বৃষ্টির সাথেই সুইমস্যুটে পুলের জলে সন্দীপ্তা, নেটদুনিয়ায় উঠল ঝড়

এবার সোনামণি ‘রাধিকা’ রূপে আসেন ‘এক্কা দোক্কা’য়। সপ্তর্ষি মৌলিকের সাথে কিন্তু তাঁর জুটি জমেনি। বাধ্য হয়ে ফেরানো হয় প্রতীককে। তৃণার বালিঝড়ের মতো এখানেও ব্যর্থ হয় সোনামণি-প্রতীকের ‘হিট’ জুটি। টিআরপি তলানিতে নিয়েই বিদায় নিয়েছে এক্কা দোক্কা।

এরপর তিয়াশা লেপচার ক্ষেত্রেও খুব একটা আলাদা নয়। তাঁর ডেবিউ সিরিয়াল ‘কৃষ্ণকলি’ লম্বা সময় ধরে বাংলা সেরা থেকে রেকর্ড হয়েছিলো।

তিয়াশা হয়ে উঠেছিলেন ‘শ্যামা’। জি এর হিট জুটি তারপর চ্যানেল বদলে যান স্টার জলসায়। এখানেও সেই এক গল্পের পুনরাবৃত্তি। ‘কৃষ্ণকলি’র নীল-তিয়াশা জুটি ‘বাংলা মিডিয়াম’এ টিআরপি খাবি খাচ্ছেন।

গুঞ্জন, শীঘ্রই নাকি বন্ধও হতে পারে সিরিয়ালটি। নতুন প্রজন্মের তিন অভিনেত্রীরই এক দশা কেন? একই জুটি দ্বিতীয় সিরিয়ালে কেন ফেরাতে পারছেন না দর্শক? তবে কি জোরালো গল্প খুঁজছেন দর্শকরা? নাকি দিন বদলানোর সাথে সাথে কমছে এখনকার অভিনেত্রীদের?