ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এসেছে, কমেডিয়ান ও অভিনেতা রাসেল ব্র্যান্ডের বিরুদ্ধে। ২০০৬ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৪ জন নারী তার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তুলেছেন, যখন তিনি ‘বিবিসি রেডিও টু’, চ্যানেল ৪ ও হলিউডের একজন অভিনেতা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সানডে টাইমস, দ্য টাইমস ও চ্যানেল ৪ এর যৌথ উদ্যোগে এক তদন্তে এই তথ্য মেলে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে রাসেল ব্র্যান্ড তার বিরুদ্ধে তোলা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন, জানান তার সবগুলো সম্পর্কই ছিলো ‘অপর পক্ষের সম্মতিতে’।
মূলত নিজের ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ অবস্থানে থাকাকালে রাসেল ব্র্যান্ড এই হয়রানিগুলো করে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠেছে।
ব্র্যান্ড ২০০০ এর দশকের শুরুতে একজন রেডিও ব্যক্তিত্ব ও টেলিভিশন উপস্থাপক হওয়ার আগে স্ট্যান্ড-আপ কৌতুক অভিনেতা হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন।
বিশেষত যুক্তরাজ্যের এমটিভি ও ‘বিগ ব্রাদার’-এর ইউকে স্পিনঅফের জন্য।
তাকে নিয়ে প্রকাশিত সানডে টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, ৪ জন নারী তার বিরুদ্ধে একেবারেই স্পষ্ট ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনেছে। এ ছাড়াও যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন আরও অনেক নারী।
এক নারী অভিযোগ করেছেন যে, ব্র্যান্ড তাকে তার লস অ্যাঞ্জেলেসের বাড়িতে ধর্ষণ করে। একই দিনে তাকে একটি ‘রেপ ক্রাইসিস সেন্টার’-এ চিকিৎসা করা হয়। তার এই তথ্যের সমর্থনে মেডিকেল রেকর্ডও রয়েছে বলে জানায় টাইমস।
অপর এক নারী অভিযোগ করেছেন যে, ব্র্যান্ড তাকে লাঞ্ছিত করেছিল যখন তার বয়স ছিলো ১৬ বছর ও ব্র্যান্ডের ৩০ এর কাছাকাছি।
তিনি অভিযোগ করেন যে, ব্র্যান্ড মানসিকভাবে আপত্তিজনক ও নিয়ন্ত্রণকারী এই সম্পর্কে সেই নারীকে তখন ‘শিশু’ হিসাবেও উল্লেখ করেছিলেন।
তৃতীয় এক নারী দাবি করেন, লস অ্যাঞ্জেলসে তার সঙ্গে কাজ করার সময় ব্র্যান্ড তাকে যৌন নির্যাতন করেছিল। সে তার অভিযোগের বিষয়ে অন্য কাউকে বললে তিনি আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
চতুর্থ আরেক নারীও ব্র্যান্ডের দ্বারা যৌন নিপীড়নের অভিযোগ করেছেন। তিনি তার প্রতি শারীরিক এবং মানসিক অপব্যবহারের অভিযোগ করছেন।
এদিকে ইউটিউব ও এক্স-এ পোস্ট করা ভিডিওতে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ রূপে অস্বীকার করে রাসেল জানায়, এটি তার বিরুদ্ধে ‘সমন্বিত আক্রমণ’।
তিনি বলেন, এটি আশ্চর্যজনক ও এমন কিছু গুরুতর অভিযোগ যা আমি একেবারেই অস্বীকার করি। এই অভিযোগগুলি সেই সময়ের সঙ্গে সম্পর্কিত যখন আমি মূলধারায় কাজ করছিলাম, যখন আমি সব সময় সংবাদপত্রে ছিলাম, যখন আমি চলচ্চিত্রে ছিলাম, আমি আমার বইগুলিতে ব্যাপকভাবে লিখেছি আমি খুব, খুব অশ্লীল ছিলাম। সেই অশ্লীলতার সময়ে আমার সম্পর্কগুলি ছিল একেবারে, সর্বদা সম্মতিপূর্ণ।
এটি তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ ও তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন বলেও জানান।এই প্রসঙ্গে কৌতুক অভিনেতার নাম উল্লেখ না করে, মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, যৌন নিপীড়নের অভিযোগের একটি গণমাধ্যম প্রতিবেদন সম্পর্কে আমরা সচেতন। এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। তারা জানায়, যদি কেউ বিশ্বাস করে যে তারা যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে, তা যতদিন আগেই ঘটে থাকুক না কেন, আমরা তাদের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলবো।
সানডে টাইমস জানায়, যে সমস্ত মহিলা এই নিপীড়নের শিকার হয়েছেন তারা কেবল মাত্র সাংবাদিক তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরই কথা বলেছেন ও অনলাইনে ‘ইনফ্লুয়েন্সার’ হিসেবে রাসেল ব্র্যান্ডের নতুন কার্যক্রমে নিজেদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অবস্থান নিয়ে তারা শঙ্কিত বলেও জানান।
ছবিঃ সংগৃহীত।