সবচেয়ে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ জানতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (সিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছে কেন্দ্রীয় রেলওয়ে বিভাগ। সাথে রেল দপ্তর থেকেও পৃথকভাবে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
মঙ্গলবার সকালে সিবিআইয়ের ১০ সদস্যের একটি তদন্ত দল বালেশ্বরে দুর্ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছেছেন। ওড়িশার পুলিশের কাছ থেকে তদন্তের দায়িত্ব বুঝে নেবে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম এনডিটিভি।
এই দুর্ঘটনায় ওড়িশার পুলিশ ‘অবহেলাজনিত কারণে মৃত্যু এবং জীবনকে বিপদগ্রস্ত’ করার অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে।
কর্মকর্তাদের মতে, সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া একটি উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ। শুধু একটি শীর্ষ সংস্থার পক্ষেই বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে পয়েন্ট মেশিন বা ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং ব্যবস্থায় কোনো ধরনের নাশকতা হয়েছে কি না, তা চিহ্নিত করা সম্ভব। এ ছাড়া দুর্ঘটনার অন্য সম্ভাব্য কারণের মধ্যে আছে, ট্র্যাকের রূপান্তর বা ভুল সিগনাল পেয়ে ট্রেনের ট্র্যাক বদলানো।
রেল কর্মকর্তারা এর আগে সম্ভাব্য ‘নাশকতা’ এবং ইন্টারলকিং ব্যবস্থার ক্ষতি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এই ব্যবস্থাটি ট্রেনের উপস্থিতি চিহ্নিত করার কথা থাকলেও তা করেনি, এ কারণেই মূলত শালিমার-চেন্নাই কেন্দ্রীয় করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস এবং একটি মালবাহী ট্রেনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৭৫ জন ও আহত হয়েছেন আরও ১ হাজারের বেশি মানুষ।
রেল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক তদন্তে বলা হয়, ভুল সিগনালের জন্য এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিছু রেল বিশেষজ্ঞ জানান, করমণ্ডল এক্সপ্রেস খুব সম্ভবত একটি ‘লুপ লাইনের’ ভেতরে সরাসরি মালবাহী ট্রেনকে আঘাত করে।
ব্যস্ত রেল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় বহুল ব্যবহৃত প্রক্রিয়া হচ্ছে ‘লুপ লাইন’, যেটি মূল রেলওয়ে ট্র্যাক থেকে আলাদা হয়ে কিছু দূরত্ব গিয়ে আবার মূল লাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়।
ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনটি মালবাহী ট্রেনের ওপরে উঠে গেছে, যা থেকে সরাসরি সংঘর্ষের বিষয়টি প্রমাণিত হয়।সিবিআইর তদন্তে এই দুর্ঘটনা সংশ্লিষ্ট সব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হবে। সরকারি সূত্র জানিয়েছে, সব ধরনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে, যার মধ্যে আছে যান্ত্রিক ত্রুটি, ভুল এবং নাশকতা।
ছবিঃ সংগৃহীত