টুঙ্কা সাহা, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, আসানসোলঃ বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে আউট সোর্সিং তথা ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে কর্মরত রয়েছেন প্রায় ১৪০ জন ৷ যাদের বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে ঠিকা শ্রমিক হিসাবে মাস মাইনে মাত্র ৭ হাজার ৪৪ টাকা ৷ ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মীরা জানিয়েছেন,বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মাত্র ৭ হাজার ৪৪ টাকা বেতনে সংসার চালাতে পারছেন না ৷ অথচ স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে তাদের কোনো ওভারটাইমের হিসেব নেই ৷ প্রয়োজন অনুসারে তাদের এ সিফটের পরে বি সিফট বা সি সিফটের কাজেও যোগ দিতে হয় ৷ অথচ বছরে যে ৪ দিনের জাতীয় ছুটি রয়েছে,সেই দিনগুলিতে কাজ করলেও সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধা দেওয়া হয়না ৷ নো ওয়ার্ক নো পে চুক্তিতে কাজ করে যেতে হচ্ছে দিনের পর দিন ৷
জেলা হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মী হিসাবে কাজ করলেও যেহেতু ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মী, তাই তারা রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী কার্ড থেকেও বঞ্চিত রয়েছেন ৷ তাছাড়া বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে বাড়ির অন্যান্য সদস্য যারা বেসরকারি সংস্থায় কাজে যুক্ত ছিলেন তাদের অনেকেই কাজ হারিয়েছেন ৷ এর ফলে পরিবারের একজন সদস্যের নূন্যতম রোজগারে ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মীদের পরিবারগুলি আর্থিক সমস্যার সম্মুখিন হয়ে চরম দুর্দশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন ৷ তাছাড়া উৎসবের মরশুমে ঠিকা সংস্থা বোনাস হিসাবে তাদের ন্যায্য পাওনা থেকেও বঞ্চিত করেছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে নিজেদের বেতনক্রম বাড়ানোর স্বার্থে ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মীরা বারবার নিজেদের সংস্থার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে, হাসপাতাল পরিচালন সমিতির কাছে তথা হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাসের কাছে ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর সহ রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের কাছেও বারবার আবেদন করেছেন ৷
ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মীদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তিন মাস আগে ঠিকা সংস্থার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের সুপার ও রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যদের মধ্যে এক বৈঠকও হয় ৷ বৈঠকে বেতনক্রম বাড়ানোর বিষয়ে সিদ্ধান্তও হয় ৷ অথচ এখনো পর্যন্ত ঠিকা সংস্থা সেই বর্ধিত বেতনক্রম লাগু করেনি ৷ তাই এক প্রকার নিরুপায় হয়ে তারা পশ্চিম বর্ধমান জেলা শাসক পূর্ণেন্দু মাজির কাছে আত্মহত্যার অনুমতি প্রার্থনা করে বসেছেন ৷ এই বিষয়ে ঠিকা স্বাস্থ্যকর্মীরা ৩ নভেম্বর জেলা শাসকের দফতরে এক স্মারকলিপিও জমা করেছেন।