সুমিত ঘোষ, খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, মালদাঃ সকালে বাপের বাড়িতে গিয়ে মাকে বলেছিলেন, ৪০ হাজার টাকা না দিলে ওরা আমাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু টাকা দিতে পারেননি মা। অন্তঃস্বত্ত্বা মেয়েকে বলেছিলেন, ভিন্ রাজ্য থেকে ছেলেরা টাকা পাঠালেই পৌঁছে দেবেন। দেড় কিলোমিটার দূরে শ্বশুরবাড়িতে ফেরার কয়েকঘন্টা বাদেই খাটের তলা থেকে উদ্ধার হল ওই বধূর দেহ। টাকা না মেলায় তাকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন খুন করেছে বলে অভিযোগ। মালদহের পুখুরিয়া থানার পরাণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিষানপুর এলাকায় মঙ্গলবার রাতের ঘটনা। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম আসমিরা খাতুন(২৩)। অভিযোগ পেয়েই পুলিশ বধূর স্বামী ও শাশুড়িকে জিগ্গাসাবাদের জন্য আটক করেছে।
পুখুরিয়ার ওসি ঝোটন প্রসাদ বলেন, খুন নাকি অন্য কারণে মৃত্যু, ময়নাতদন্তেই তা জানা যাবে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও বধূর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছর আগে চাঁদপুরের আসমিরার দেখাশোনা করেই বিয়ে হয় পেশায় শ্রমিক বিষানপুরের শেখ হাইউলের সঙ্গে। বিয়ের সময় দাবিমতো পণের টাকা দিতে না পারায় কিছুদিন বাদে স্ত্রীকে বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন হাইউল। সেই টাকা মেটাতে তার তিন ভাই ভিন্ রাজ্যে শ্রমিকের কাজে চলে যান। টাকা পেয়ে ১০ মাস বাদে স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে যান হাইউল। তাদের দু বছরের শিশুকন্যা রয়েছে। এছাড়া আটমাসের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন আসমিরা। কিন্তু টাকার দাবিতে সম্প্রতি আসমিরার উপরে তার স্বামী ও শ্বশুরাবড়ির লোকজন ফের নির্য়াতন শুরু করেন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে এলাকায় চারবার সালিশি হয়। হাইউল আর নির্য়াতন করবেন না বলে জানালেও সমস্যা মেটেনি। অভিযোগ, কয়েকদিন ধরে ফের ৪০ হাজাক টাকা নিয়ে আসার দাবিতে আসমিরার উপরে নির্য়াতন শুরু হয়। অভিযোগ, টাকা না দিলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ায় মঙ্গলবার টাকার জন্য বাপের বাড়িতে গিয়েছিলেন আসমিরা। টাকা না মেলায় শ্বশুরবাড়িতে ফিরে আসেন। রাতে মেয়ের বাড়িতে গন্ডগোল হচ্ছে বলে প্রতিবেশীদের কাছে জেনে সেখানে গিয়ে মা জোলেদা বেওয়া দেখেন যে খাটের নীচে পড়ে রয়েছে আসমিরার দেহ।
বধূর মা জোলেদা বেওয়া বলেন, মঙ্গলবার পরিবারে একজন মারা গিয়েছিল। সবাই ব্যস্ত ছিলাম। তাই ওকে বলি ফিরে গিয়ে স্বামীকে বুঝিয়ে বলতে। কিন্তু মেয়েটাকে ওরা মেরে ফলল। ওদের কঠোর শাস্তি চাই।