অনলাইনে মিটিংয়ের হিড়িক করোনাকালে মানুষ ঘরবন্দি হতেই বেড়েছিল। লকডাউন উঠতেই সেই চাহিদা কমে গেছে, কিন্তু কর্মী অনেক। ব্যাপক কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অনলাইনে ভিডিও কলের জনপ্রিয় মাধ্যম জুম ভিডিও কমিউনিকেশন ইন্স। মঙ্গলবারই সংস্থাটি ঘোষণা করেছে ১৩০০ কর্মী ছাঁটাই করা হবে।
কর্মীদের পাশাপাশি সিইও-কেও আর্থিক মন্দার কোপে পড়তে হয়েছে। চাকরি না খোয়ালেও, তার বেতন ৯৮ শতাংশ কমিয়ে দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার জুমের সিইও এরিক ইউয়ান একটি ব্লগ পোস্টে লেখেন, বিগত কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিক এবং ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্য়ম হয়ে উঠেছে জুম। আন্তর্জাতিক স্বীকৃত ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। শুরু থেকেই জুমের সঙ্গে সংযুক্ত সকলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। সেই কারণেই আজকের এই ঘোষণা করা অত্যন্ত কঠিন। আমরা অত্যন্ত কঠিন কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সংস্থায় কর্মীসংখ্যা ১৫ শতাংশ কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রায় ১৩০০ কঠোর পরিশ্রমী এবং দক্ষ কর্মীদের বিদায় জানাতে হবে।
এরিক ইউয়ান জানান, আসন্ন অর্থবর্ষে ৯৮ শতাংশ বেতন কম নেবেন। নেবেন না কোনও বোনাসও। তার নির্বাহী নেতৃত্ব দলের সদস্যদেরও এই বছর ২০ শতাংশ বেতন হ্রাস।
আগেই গুগলের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী মাইক্রোসফট কর্প জানিয়েছিল তারা সংস্থার ১০ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করতে চলেছে। তার পরেই অ্যালফাবেটেও বিপুল ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া যায়। রাতারাতি ১২ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করে গুগলের মূল সংস্থা অ্যালফাবেট। সারা বিশ্বে অ্যালফাবেটের মোট কর্মী সংখ্যার ৬ শতাংশ। এখানেই শেষ নয়, অ্যামাজন এবং মেটার মতো বহুজাতিকও কর্মী ছাঁটাইয়ে নেমে পড়েছে।
মানবসম্পদ নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি সংস্থার দাবি, ২০২২ সাল থেকে ছাঁটাইয়ের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি পড়েছে প্রযুক্তিক্ষেত্রে। গত বছর শুধুমাত্র প্রযুক্তিক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন ৯৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। গত বছরের তুলনায় ৬৪৯ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
ব্লুমবার্গের প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২ সাল থেকে এই পর্যন্ত মার্কিন ই-কমার্স জায়ন্টি অ্যামাজন ছাঁটাই করছে ১৮ হাজার কর্মীকে। ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা ১১ হাজার কর্মী, মাইক্রোসফট ১০ হাজার কর্মীকে, সেলসফোর্স ৮ হাজার কর্মীকে, এইচপি ৬ হাজার কর্মী, টুইটার ৩ হাজার ৭০০ কর্মী ও সিগেট ৩ হাজার কর্মীকে ছাঁটাই করতে চলেছে।
সূত্রঃ এনডিটিভি। ছবিঃ সংগৃহীত