মিয়ানমারের জান্তা সরকার প্রাক্তন রাষ্ট্রদূতসহ ৬ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে। ব্রিটিশি সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিদবেদনে এই তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রাক্তন ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ভিকি বোম্যান, জাপানি চলচ্চিত্র নির্মাতা তরু কুবতা ও অং সান সুচির প্রাক্তন অর্থ উপদেষ্টা অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক শন টারনেল আছেন। ২০২১ সালে সেনা অভ্যুত্থানের পরপরই তাদের আটক করা হয়। মিয়ানমার আর্মির পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামি বছরের ৪ জানুয়ারি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বন্দীদের মুক্তি দেয়া হয়েছে।
বোম্যান ২০০২ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের দূত হিসেবে কাজ করেন। গ্রেপ্তারের সময় তিনি ইয়াঙ্গুনভিত্তিক মিয়ানমার সেন্টার ফর রেসপন্সিবল বিজনেসের (এমসিআরবি) পরিচালনায় ছিলেন।
চলতি বছরের ২৪ আগস্ট শান রাজ্য থেকে ইয়াঙ্গুনে যাওয়ার সময় বোম্যান ও তার স্বামী হিটেন লিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। বোম্যানের বিরুদ্ধে ভিসা আইন লঙ্ঘন ও তার স্বামীর বিরুদ্ধে তাকে মিয়ানমারে থাকতে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়। তাদের উভয়কেই এক বছর করে কারাদণ্ড দেন সামরিক আদালত।
অভ্যুত্থানের পরপরই ইয়াঙ্গুন থেকে আটক করা হয়েছিল শন টার্নেলকে। অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার কয়েকদিন পরে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে তিন বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। বিভিন্ন অভিযোগে টার্নেলকে ২০ বছরেরও বেশি সময়ের কারাদণ্ড দেয়া হয়। চলতি বছরের ২৬ জুলাই ইয়াঙ্গুনে জান্তা সরকারবিরোধী সমাবেশ চলাকালে গ্রেপ্তার হন জাপানি তথ্যচিত্র নির্মাতা তরু কুবতা। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ও যান্ত্রিক যোগাযোগ আইন লঙ্ঘনের দায়ে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২০১৪ সালে কুবতা জাপানে একজন রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে দেখা করেন। পরবর্তীকালে তিনি মিয়ানমারের উদ্বাস্তু ও জাতিগত সমস্যা নিয়ে বেশ কয়েকটি ডকুমেন্টারি তৈরি করেছিলেন।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস জানায়, আজকের সাধারণ ক্ষমার আগে অন্তত ৬৮ জন সাংবাদিককে মিয়ানমারে আটক করা হয়েছে।
ক্ষমতা দখলের পর থেকেই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। বিভিন্ন অভিযোগে দেশি-বিদেশি প্রায় ১৬ হাজার মানুষকে বন্দি করে তারা।
অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমার জান্তা সরকারের হাতে ২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। ছবিঃ সংগৃহীত।