হাঁটার যে কোনও বিকল্প নেই সুস্থ থাকতে, সে কথা চিকিৎসকরা স্বীকার করেন। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানোসহ সব সমস্যার সমাধান। কতক্ষণ হাঁটলে কতটা উপকার পাবেন, ওজন কমাতে পারবেন তার কিছু বৈজ্ঞানিক ভিত্তি রয়েছে। ‘নেচার’ জার্নালে প্রকাশিত সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দিনে আট হাজার ছ’শো পা হাঁটলে আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা সম্ভব। যারা ইতিমধ্যেই ওবেসিটিতে আক্রান্ত, তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য দিনে এগারো হাজার কদম হাঁটতে হবে।
মোট ছ’শো জনকে নিয়ে চার বছর ধরে এই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কেবল ওজন ঝরাতেই নয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে, ডায়াবিটিস কমাতে এমনকি মানসিক অবসাদ কমাতেও হাঁটাহাঁটির কোন বিকল্প নেই।
কিন্তু কী ভাবে হাঁটলে, দিনে কতটা হাঁটলে তা ওজন ঝরাতে সাহায্য করে, এটা না জানলে পণ্ডশ্রম! বাজার-দোকান, অফিস, কেনাকাটা ইত্যাদিতে হেঁটে গেলেই উপকার পাবেন, না কি ঘণ্টার পর ঘণ্টা শরীরকে কষ্ট দিয়ে হাঁটলে তবেই মিলবে সুফল? কতক্ষণ ধরে হাঁটবেন বা কখন হাঁটবেন, হাঁটার সব নিয়মনীতি না জেনেই পথে নেমে পড়লে কিন্তু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।
চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদদের মতে, একটানা হাঁটাতেই লুকিয়ে সুফল।
ফিটনেস বিশেষজ্ঞদের মতে, লক্ষ্য রাখতে হবে সেকেন্ডে দু’টি স্টেপ। অত হিসাব কষতে না পারলে অন্তত ১৫-২০ মিনিটে দেড় কিলোমিটার পথ অতিক্রম করলে হবেই।
পোষ্যকে সঙ্গে করে বা দলবেঁধে গল্প করতে করতে না হাঁটাই ভাল। এতে হাঁটার গতি শ্লথ হয়ে পড়ে। মোবাইল কানে নিয়ে হাঁটলে হাঁটার উপকারিতা আসে না, কথা বলতে গিয়ে হাঁপিয়ে গিয়ে বেশি হাঁটা যায় না। মাথায় একগাদা চিন্তা নিয়ে হাঁটবেন না। হাঁটা একটা নেশা। অভ্যাসের মতো রুটিনে ঢুকিয়ে নিয়ে দেখুন, মন্দ লাগবে না। প্রথম প্রথম একঘেয়ে লাগলে মোবাইলের হেডফোন কানে লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে হাঁটুন। এতে এমন কিছু হরমোন ক্ষরিত হবে, যা দুশ্চিন্তা কমায়। বড় রাস্তায় হাঁটলে হেডফোন গুঁজে হাঁটার সময় সচেতন থাকুন। হাঁটার সময় পরার জন্য জুতো খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। পায়ে আরাম দেয়, এমন জুতো পরে হাঁটুন।
ছবিঃ প্রতীকি।