বদলে যাচ্ছে পর্যটক আকৃষ্ট করার মতো স্থানগুলো৷ তীব্র দাবদাহ, ধ্বংসাত্মক ঝড়, গলতে থাকা বরফ, শীর্ণকায় হয়ে আসা সৈকত- এমন নানা সমস্যায় বিপর্যয়ের ঝুঁকিতে পড়েছে বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলো।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব টের পেতে চাইলে চলে যেতে পারেন স্পেনের মায়োর্কার এস ট্রেঙ্কে৷ ২০ শতকের মধ্যভাগে স্বৈরাচারী ফ্রান্সিসকো ফ্রাঙ্কোর শাসনামলে সেখানে তৈরি হয়েছিল বিশালাকার কংক্রিটের বাঙ্কার, যা এতদিন লুকানো ছিল বালিয়াড়ির নিচে৷ কিন্তু এখন সেগুলো উপকূলজুড়ে উন্মুক্ত পড়ে রয়েছে৷
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিও ক্রমশ গ্রাস করছে এই সৈকতকে৷ বিশেষজ্ঞদের হিসাবে, আগের চেয়ে সৈকতটি অন্তত ৪০ মিটার ছোট হয়ে গেছে৷ বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কায় একদিন মায়োর্কার মতো আকর্ষণীয় পর্যটন সৈকতগুলো সমুদ্রগর্ভে হারিয়ে যাবে৷
বিশ্বের অনেক দেশ পর্যটনে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছে। যেমন- ক্যারিবীয় দ্বীপ বাহামা৷ ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ঘূর্ণিঝড় ডরিয়ানের আঘাতে দ্বীপটি বিধ্বস্ত।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার কারণে বরফ গলায় কিছু অঞ্চলে স্কি রিসোর্টেও বিপর্যয় দেখা দিয়েছে৷ অন্যতম ভুক্তভোগী আলপাইন অঞ্চল। সেখানকার অনেক স্কি রিসোর্ট কৃত্রিম বরফ ছিটিয়ে ঘাটতি মেটানোর চেষ্টা করছে৷
কৃত্রিম বরফই ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় পর্যটন টিকিয়ে রেখেছে বলে উল্লেখ করেছেন সেখানকার পর্যটনমন্ত্রী আর্নল্ড শুলার৷ এর জন্যে যে নির্দিষ্ট শীতল তাপমাত্রা প্রয়োজন, সেটিও অনেক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
খরা আর তীব্র দাবদাহের পাশাপাশি নতুন নতুন সংক্রামক রোগ, বিলীয়মান জীববৈচিত্র্যের মতো সংকটগুলো আগামী দিনগুলোতে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর জন্য আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠতে পারে। তবে এর ফলে উত্তরাঞ্চলের অপেক্ষাকৃত শীতল দেশগুলোতে পর্যটন বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ তীব্র গরমে এরই মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা এড়ানোর চেষ্টা করছেন পর্যটকরা৷
বিশেষজ্ঞদের মতে, পর্যটননির্ভর অঞ্চলগুলোকে এখন থেকেই জলবায়ু পরিবর্তনের ধাক্কার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে হবে৷ এর জন্য সহজ কোনো সমাধান নেই৷ প্রকৃতি অনুযায়ী এক এক অঞ্চলকে নিজেদের উপায় নিজেরাই বের করতে হবে৷ কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থানীয়দের এই শিল্পের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্য খাতে মনযোগ দিতে হবে৷
সূত্রঃ ডয়েচে ভেলে।