বাবাকে নিয়ে লিখতে গেলে দুনিয়ার কাগজ, কলম ও কালি সব ফুরিয়ে যাবে তবু লেখা শেষ হবেনা…..

Published By: Khabar India Online | Published On:

বাবাকে নিয়ে লিখতে গেলে দুনিয়ায়র কাগজ, কলম ও কালি সব ফুরিয়ে যাবে তবু লেখা শেষ হবেনা…..
বাবা,,,।

শিমু কলি ( বাংলাদেশ )

তোমার ঔরস এ জন্ম নিয়ে আমিই শ্রেষ্ঠ ভাগ্যবতী…. তোমার হাত ধরে হাটতে শেখা, আর এখনো সেই হাত যেনো এক পৃথিবী সমান সাহস……
ছোটবেলা থেকেই নানা বিষয়ে আমাকে সেরা বানানোর চেষ্টা য় কত শ্রম দিয়েছো, আমি হয়তো অতটাও সেরা হতে পারিনি তোমার স্বপ্নের মতো…..
অংক আর ইংলিশ পড়ানোর দায়িত্ব ছিলো তোমার বাকিটা মায়ের, অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে ফিরে এলেও কখনো তুমি বিরক্ত হওনি…..
ঠান্ডা মাথায় আমাকে কত সুন্দর করে সব বোঝাতে…. প্রায় সাত আট কিলোমিটার দূরে আমাকে প্রতিদিন সাইকেলে করে স্কুলে নিয়ে যেতে…. আবার নিয়ে আসতে স্কুল শেষে…. একটুও ক্লান্তি ছিলনা তোমার…. সারা রাস্তা বাবা মেয়ে কত কথা বলতে বলতে যেতাম….ক্লাস ফাইভে তখন…. রাস্তায় যেতে যেতে পড়া থেকে প্রশ্ন করতে করতে নিয়ে যেতে…. পরীক্ষাটি আগে বাসায় কশ্চিন তৈরি করে পরীক্ষা নিতে…. তুমিই ছিলে আমার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক…. আমার আজো ভাবলে অবাক লাগে তোমার পড়ানো ইম্পর্ট্যান্ট কশ্চিনগুলোই কিভাবে চলে আসতো পরীক্ষায়….. আর আমি সর্বোচ্চ নম্বর পেতাম…. তোমার আর আম্মুর আমাকে নিয়ে এই কষ্ট আর শ্রমগুলো মনে করলে নিজেকে অপরাধী মনে হয়… হয়তো তোমাদের সেই শ্রমের মুল্য আমি দিতে পারিনি….তোমাদের কারনেই আমি নাচ, গান, আবৃত্তি, পড়ালেখায় সব জায়গায় ছিলাম সেরা….
জীবনে কখনো কোথাও হোঁচট খেলেও তোমার ভরসায় আবার ঘুরে দাড়িয়েছি…… কখনোই কোনো ব্যার্থতায় তুমি আমাকে দোষারোপ করোনি বরং উৎসাহ জুগিয়েছো সামনে ভালো করার….. জ্ঞান, বুদ্ধি, বিবেক, সরলতা, মানবিকতা, ধৈর্যশীলতা এসব গুণই আমার তোমার কাছ থেকে পাওয়া সেরা উপহার ….. এইসব গুণের কারনে সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করার শক্তি পাই….. আর কেউ বুঝুক আর না বুঝুক তুমি কন্ঠ শুনলেই বুঝতে পারো আমি ভালো আছি না খারাপ…. আমার সব আবেগ , অপারগতা বোঝার ক্ষমতা শুধু তোমারই আছে…… কখনো কখনো হয়তো কত অভিমান করেছি, রাগ করেছি কিন্তু তুমি স্বভাব বশত নিজগুণে ক্ষমা করে দিয়েছো সাথে সাথেই হয়তো আমার জন্য আল্লাহর দরবারে তোমার দুহাত তুলেছো…. আরো একশ বছর তোমার দোয়ার এহাত চাই আমার মাথার উপর…… তোমাকে কখনো বলা হয়নি যেদিন বঁধু বেশে তোমার কাছ থেকে দূরে চলে যাচ্ছিলাম সেদিন কাঁদতে কাঁদতে সেন্স লেস হয়ে যাচ্ছিলাম শুধু এই ভেবে কেনো বাবা আমাকে যেতে দিচ্ছে, আটকে রাখলেই তো পারতো….. কেনো পর করে দিচ্ছে….. এটাই তো আমার বাড়ি তাহলে কেনো যাচ্ছি বাড়ি ছেড়ে…..!! এতো আদর স্নেহে মানুষ করা মেয়েকে কেনো যেতে দিতে হয়!!
এখনো তোমার আর আম্মুর ব্যাবহার করা বিছানায় গড়ালে সেই পুরোনো ভালোবাসার গন্ধ আমাকে শিশু বানিয়ে দেয়…..
আমি আসলে বড় হতে চাইনি কখনোই তোমাদের কাছে….. সেই ছোটই থাকতে চেয়েছি….
তুমি আমার প্রিয় বাবা…. আর আমি তোমার সেই ছোট্ট রাজকুমারী…..
সব পরিস্থিতিতেই আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ….. আজীবন আমার আশ্রয়ের বটবৃক্ষ হয়ে থাকবে তুমি আর আমি লুকিয়ে থাকবো তোমার ছায়ায় ছোট্ট পাখির মতো……।

আরও পড়ুন -  কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের টেলিমেডিসিন পরিষেবা ই-সঞ্জিবনীর মাধ্যমে টেলিফোনে ৬ লক্ষ পরামর্শ দেওয়া হয়েছে