ক্ষেত্রবিশেষে কোনো অসুখ যেমন এর জন্য দায়ী হতে পারে, আবার কিছু মানুষের জন্মগতভাবেই ওজন বেড়ে যায়। তাদের জিনেই ত্রুটি থাকে, ফলে তাদের পেটে প্রচুর খাবার থাকলেও তাদের মস্তিষ্ক বলতে থাকে যে তারা ক্ষুধার্ত।
সব সময় নিজেকে ক্ষুধার্ত মনে হয়। এমন একজন হলেন কেভিন জ্যাকসন। নিজের পরিস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি হয়তো পেট ভরে খেলাম, কিন্তু ৫ থেকে ১০ মিনিট পরই আমার মনে হয় যেন আমি কিছুই খাইনি। ফলে আমার তখন একটা স্যান্ডউইচ খেতে হয়, আধা ঘণ্টা পরই এক বাটি সিরিয়াল, ঘুমাতে যাওয়ার আগে হয়তো আরও এক বাটি। না হলে আমাকে রাতে উঠে কিছু খেতে হবে।’
কেভিন তার ডিএনএ পরীক্ষা করাচ্ছেন। যুক্তরাজ্যের লুটনে তার মতো আরও ১০০ জনকে পরীক্ষা করা হবে। এর লক্ষ্য তাদের ত্রুটিপূর্ণ জিন আছে কি না তা খুঁজে বের করা।
গবেষক ড. বিনীশ মাসুদ বলেন, এখানে কতজন জিনগত কারণে মোটা হচ্ছেন এবং কতজন পারিপার্শ্বিক কারণে মোটা হচ্ছেন,তা বের করতে পারবো বলে আশা করছি। এতে বোঝা যাবে যে এটা কোনো দোষ নয়, বরং হরমোনগত সমস্যা। হরমোনের ভারসাম্যের অভাবেই তাদের অতিরিক্ত ক্ষুধা পাচ্ছে এবং তারা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।
জিনগত স্থূলতা নিয়ে গবেষণায় বিজ্ঞানীরা শত শত ডিএনএ নমুনা পরীক্ষা করেছেন। গত ২৫ বছরে বিজ্ঞানীরা এমন ৪০টি জিন চিহ্নিত করেছেন, যা স্থূলতার সাথে সম্পর্কিত।
ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক সাদাফ ফারুকী বলেন, ‘কিছু লোক আছেন, যারা অনেক খেতে পারেন। কেউ কেউ যতই খাক, কখনোই মোটা হয় না। জিনের কারণেই এটা হয়। এসব জিনই আমাদের মস্তিষ্ক ও ক্ষুধাকে নিয়ন্ত্রণ করে। আগে ভাবা হতো, আমরা কতটা খাবো তা আমরাই নিয়ন্ত্রণ করি, আসলে ব্যাপারটা এত সরল নয়। স্থূলতার জেনেটিক কারণ জানা গেলে এর ভালো চিকিৎসা সম্ভব হবে।’
আপনার কি মনে হয়, জিনগত কারণটা জানতে পারলে লোকে আপনার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে? এর জবাবে কেভিন জ্যাকসন বলছেন, ‘নিশ্চয়ই। আসল কারণটা জানতে পারলে সবাই বুঝবে যে এটা আমার দোষে হয়নি।’ সূত্র: বিবিসি। / প্রতীকী ছবি।