শ্রীলংকায় তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে সৃষ্ট হওয়া বিক্ষোভ থামাতে দেশজুড়ে ৩৬ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে সরকার। গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই যে কোন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। এমন আইনের পরও বিক্ষোভের শঙ্কা থেকে এবার দেশটিতে সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, স্থানীয় সময় শনিবার (২ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, টুইটার এবং ইউটিউব চ্যানেল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়। ভুল তথ্য সরবরাহ থামাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
স্বাধীনতার পর অর্থনৈতিকভাবে সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি পার করা শ্রীলংকার এই সংকটের জন্য মূলত রাজাপাকসে সরকারকে দায়ী করে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনের বাইরে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সাধারণ মানুষ আর আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে। বিক্ষোভকারীরা অনেক যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করে, পুলিশ টিয়ারশেল আর জলকামান ব্যবহার করে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে সমর্থ হয়। এই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
জ্বালানি সংকট, গ্যাস-পানির তীব্র সংকট, খাদ্য সংকট, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, প্রয়োজনীয় পণ্যের আকাশচুম্বী মূল্যসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত শ্রীলংকা অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া হওয়ার পথে। এই পরিস্থিতিতে ভারত চাল পাঠালে দেশটিতে চালের বাজার দর কমবে কিছুটা হলেও। গত ডিসেম্বরে দেশটির বাণিজ্য ঘাটতি দ্বিগুণ হয়ে ১ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।
বৈদেশিক ধার-দেনা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা আর নিজেদের অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে শ্রীলংকা। ছবি- রয়টার্স