অভিনেত্রী ও চলচ্চিত্র প্রযোজক সুমিতা দেবী

Published By: Khabar India Online | Published On:

সুমিতা দেবী ঢাকার চলচ্চিত্রের প্রথম দিকের জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিকও ছিলেন। সুমিতা দেবী নামটি দিয়েছিলেন ফতেহ লোহানী। তার পারিবারিক নাম ছিল হেনা ভট্টাচার্য। সুমিতা দেবীকে বলা হয় বাংলা চলচ্চিত্রের ‘ফার্স্ট লেডি’। কারণ তার হাত ধরেই বাংলা চলচ্চিত্রে নায়িকার প্রচলন শুরু হয়। সুমিতা দেবীর ১৯২৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি মানিকগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৪৪ সালে তিনি পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন। শিক্ষাজীবন শুরু করেন পুরনো ঢাকার বাংলা বাজার স্কুলে। এরপর ১৯৫০ সালে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হলে পরিবারের সঙ্গে তিনি কলকাতায় চলে যান। সেখানে অমূল্য লাহিড়ী নামক এক ব্যক্তিকে বিয়ে করলেও তার সংসার বেশীদিন টেকেনি।

আরও পড়ুন -  অভিনেত্রী শার্লিন চোপড়া বাটি থেকে টপ বানিয়ে এলেন এই অবস্থায়, ভিডিও দেখে নেটদর্শকরা থমকে গেলেন

১৯৫৭ সালে ফের ঢাকায় ফিরে আসেন সুমিতা দেবী। ঢাকায় এসে জড়িয়ে যান চলচ্চিত্রের সঙ্গে। হেনা ভট্টাচার্য থেকে হয়ে যান সুমিতা দেবী। সেই সময়ের বিখ্যাত চলচ্চিত্রকার ফতেহ লোহানী হেনা পাল্টে সুমিতা রাখেন। ১৯৫৯ সালে ‘এ দেশ তোমার আমার’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে সুমিতা দেবীর। ছবিটির পরিচালক ছিলেন এহতেশাম। এরপর ১৯৬০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ফতেহ লোহানীর ‘আসিয়া’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চারদিকে সুমিতার নামডাক ছড়িয়ে পড়ে।

১৯৬১ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘কখনো আসিনি’ ছবিতে অভিনয় করেন সুমিতা দেবী। একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে জহির রায়হানের সঙ্গে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন সুমিতা। এরপর প্রেমের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়। ধর্মান্তরিত হয়ে সুমিতা থেকে হয়ে জান নিলুফার বেগম। পর্দায় তিনি সুমিতাই থেকে গেলেন। তাদের দুই সন্তান অনল রায়হান ও বিপুল রায়হান চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত।

আরও পড়ুন -  রানির ভরসা ছিল যে বিলাসবহুল রাজপ্রাসাদ

সুমিতা দেবীর উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে ‘সোনার কাজল’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘দুই দিগন্ত’, ‘এই তো জীবন’, ‘অশান্ত প্রেম’, ‘ওরা এগার জন’, ‘সুজন সখী’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘আমার জন্মভূমি’, ‘চিত্রা নদীর পাড়ে’, ‘নাতবউ’। এর মধ্যে ‘কাঁচের দেয়াল’ ছবির জন্য তিনি পাকিস্তানের ‘নিগার’ পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়া ‘সঙ্গম’ ও ‘ধুপ চাও’ নামে দুটি উর্দু ছবিতেও অভিনয় করেন সুমিতা দেবী। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ ছবি ‘ফুলকুমার’ মুক্তি পায় ২০০০ সালে। অভিনয় ছাড়াও তিনি বেশকিছু ছবি পরিচালনা করেন। এরমধ্যে রয়েছে ‘আগুন নিয়ে খেলা’, ‘মোমের আলো’, ‘মায়ার সংসার’, ‘আদর্শ ছাপাখানা’ ও ‘নতুন প্রভাত’।

আরও পড়ুন -  Tanushree Bhattacharya: আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা, তারপরই নতুন অতিথির আগমন

অভিনয় দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৬২ সালে অল পাকিস্তান ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ড এবং ১৯৬৩ সালে নিগার প্রাইজ সম্মানে ভূষিত হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তিনি বাচসাস পুরস্কার এবং টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ পুরস্কার লাভ করেন।

সুমিতা দেবী ৬ জানুয়ারি, ২০০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।