গত এক দশকে বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। এরই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি কোম্পানিটির বাজারমূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের মাইলফলক ছোঁয়ার কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।
সোমবার অ্যাপলের শেয়ারপ্রতি মূল্য ২ শতাংশের বেশি কমে প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়ায় ১৭৫ ডলার ৭৪ সেন্ট। এর আগে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম স্পর্শ করেছিল ১৮২ ডলার ৮৬ সেন্ট। ফলে বাজারে কোম্পানিটির মোট মূল্য দাঁড়ায় ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি।-খবর রয়টার্স।
গত সপ্তাহে অ্যাপলের স্টকের পরিমাণ বেড়েছে ১১ শতাংশ। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ৩০ শতাংশ বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা ক্রমেই কোম্পানিটির ওপর আস্থাশীল হয়ে ওঠায় এমনটা হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন অ্যাপলের ভোক্তারা আইফোন, ম্যাকবুক, অ্যাপল টিভি এবং অ্যাপল মিউজিকের জন্য আরো উচ্চমূল্য পরিশোধ করতে প্রস্তুত।
২ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূল্য থেকে ৩ লাখ কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছতে অ্যাপলের সময় লেগেছে মাত্র ১৬ মাস। করোনা মহামারীকালীন গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেট এবং ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজনের মতো মেগাটেক কোম্পানিগুলোর নেতৃত্ব দেয়ার ফলে এমনটা হয়েছে। মহামারীর সময়ে ব্যবহারকারীরা প্রচুর পরিমাণে প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে যাওয়ায় অ্যাপলের আয়ে উল্লম্ফন দেখা গেছে। ১ লাখ কোটি ডলারের বাজার মূল্য থেকে ২ লাখ কোটি ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হতে অ্যাপলের সময় লেগেছিল দুই বছর।
ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপিটাল পোর্টফোলিও ম্যানেজার ব্রেইন ফ্র্যাঙ্ক বলেন, বর্তমানে বাজারে সবচেয়ে দামি কোম্পানিগুলোর একটি অ্যাপল। বর্তমানে বিশ্ব বাজারে মার্কিন প্রযুক্তিপণ্যগুলোর আধিপত্যেও নেতৃত্ব দিচ্ছে কোম্পানিটি। বিনিয়োগকারীরা অ্যাপলের ওপর এখন অনেকটা চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস স্থাপন করছে।
অ্যাপলের আয় বৃদ্ধির আরেকটি নতুন উপায় হিসেবে বিনিয়োগকারীরা সম্ভাব্য অ্যাপল কারের প্রতিও নজর রাখছেন। পাশাপাশি পরিষেবা খাতে বিভিন্ন অ্যাপ ও অ্যাপল টিভিও কোম্পানিটির আয়ে সামান্য অবদান রাখছে। মূলত অ্যাপলের ৬৫ শতাংশ আয় আসে কোম্পানিটির আইফোন বিক্রির মাধ্যমে।
৩ লাখ কোটি ডলারের ক্লাবে প্রবেশ করাটা অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) টিম কুকের মুকুটে আরেকটি পালক যোগ করছে। ২০১১ সালে স্টিভ জবসের পদত্যাগের পর তিনি কোম্পানিটির সিইওর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এছাড়াও নতুন পণ্য ও বাজারের সম্প্রসারণ অ্যাপলকে ৩ লাখ কোটি ডলারে পৌঁছাতে সাহায্য করেছে।
অ্যাপলের ৩ লাখ কোটি ডলারের ক্লাবে চলে গেলে ২ লাখ কোটি ডলারের ক্লাবে একমাত্র কোম্পানি হিসেবে থাকবে মাইক্রোসফট করপোরেশন। একই সময়ে গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট, ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন এবং বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলার বাজারমূল্য ১ লাখ কোটি ডলার অতিক্রম করেছে।