নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ১৩ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রতিজনকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
ঘটনার এক বছর পর মঙ্গলবার বেলা ১২টায় নোয়াখালীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক জয়নাল আবেদীন এ রায় ঘোষণা করেন।
এসময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন, আসামি নুর হোসেন বাদল, আবদুর রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল হোসেন মিয়া, মাঈন উদ্দিন সাজু, সামছুদ্দিন সুমন কন্ট্রাকটর, নুর হোসেন রাসেল, আনোয়ার হোসেন সোহাগ ও দেলোয়ার হোসেন দেলু ।
মামলার চার আসামি পলাতক রয়েছে এখনও। তারা হচ্ছেন, আবদুর রব চৌধুরী, মোস্তাফিজুর রহমান, জামাল উদ্দিন ও মিজানুর রহমান তারেক।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মামুনুর রশীদ লাবলু। বাদী পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন ও আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট জসিম উদ্দিন বাদল।
অ্যাড. মামুনুর রশীদ লাবলু বলেন, এ মামলায় মোট ১৩ জনকে অভিযুক্ত করে ইতোমধ্যে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পিবিআই। অভিযুক্তদের মধ্যে ৯ আসামিকে আদালতে আনা হয়েছে। অপর চারজন পলাতক রয়েছে। গত এক বছর আদালত বাদীসহ ৪০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ২০২০ সালে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের স্থানীয় সন্ত্রাসী দেলোয়ার বাহিনী স্বামীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে ওই নারীকে ধর্ষণচেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে প্রহার করে এবং সেই দৃশ্য মোবাইলফোনে ধারণ করেন অভিযুক্তরা।
আহত ওই নারী চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে জেলা সদরে তার বোনের বাসায় পালিয়ে যান। সেখানে গিয়েও অভিযুক্তরা তার কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় আগের ধারণ করা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনার পর সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়ানো ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ধর্ষণ, নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে তিনটি মামলা করেন ওই গৃহবধূ। এর মধ্যে ৪ অক্টোবর ধর্ষণের মামলায় দেলোয়ার ও আবুল কালামের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। ছবি: সংগৃহীত