স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন, ২০২০-র গ্র্যান্ড ফিনালেতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ

Published By: Khabar India Online | Published On:

খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ আপনারা একের পর এক বড় বড় সমস্যা সমাধান করে চলেছেন। দেশের সামনে যে সমস্যাগুলি রয়েছে আপনাদের সাফল্য এগুলিকেও সমাধানের পথ দেখায়। তথ্য, ডিজিটাইজেশন এবং হাইটেক ভবিষ্যৎ নিয়ে ভারতের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকেও মজবুত করে।

বন্ধুগণ, আমরা সবসময়ই গর্বিত যে বিগত শতাব্দীগুলিতে আমাদের দেশ বিশ্বকে শ্রেষ্ঠ থেকে শ্রেষ্ঠতম বিজ্ঞানী, অসাধারণ প্রযুক্তিবিদ, প্রযুক্তি ব্যবসায় সফল কর্ণধার দিয়েছে। কিন্তু এখন একবিংশ শতাব্দীতে দ্রুতগতিতে পরিবর্তিত বিশ্বে ভারতকে তেমনই প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করার জন্য, ততটাই দ্রুতগতিতে আমাদের নিজেদেরকেও পরিবর্তন করতে হবে।

এই ভাবনা নিয়ে এখন দেশে উদ্ভাবনের জন্য, গবেষণার জন্য, উন্নত নকশার জন্য, উন্নয়নের জন্য, বাণিজ্যের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো দ্রুতগতিতে গড়ে তোলা হচ্ছে। এখন শিক্ষার উৎকর্ষের দিকে অনেক বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে, একবিংশ শতাব্দীর প্রযুক্তিকে সঙ্গে নিয়ে, একবিংশ শতাব্দীর প্রয়োজন মেটানোর উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থাও ততটাই জরুরি।

‘প্রধানমন্ত্রী ই-বিদ্যা’ কর্মসূচি হোক কিংবা ‘অটল ইনোভেশন মিশন’, দেশে বৈজ্ঞানিক মেজাজ গড়ে তোলার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ছাত্র বৃত্তির বিস্তার কিংবা ক্রীড়া জগতের সঙ্গে যুক্ত প্রতিভাকে আধুনিকতম সুযোগ-সুবিধা ও অর্থনৈতিক সাহায্য, নতুন নতুন গবেষণাকে উৎসাহ প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প কিংবা ভারতে বিশ্বমানের ২০টি ‘ইনস্টিটিউটস অফ এমিনেন্স’ গড়ে তোলার অভিযান, দেশে অনলাইন শিক্ষার জন্য নতুন নতুন সরঞ্জাম গড়ে তোলা কিংবা স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের মতো এই অভিযান; আমাদের প্রচেষ্টা হল ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক করে তোলা, আধুনিকতম করে তোলা, যাতে এ দেশের প্রতিভারা সম্পূর্ণ বিকাশের সুযোগ পায়।

বন্ধুগণ, এই প্রক্রিয়ায় কিছুদিন আগে দেশের নতুন শিক্ষানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। এই নীতি একবিংশ শতাব্দীর নবীন প্রজন্মের ভাবনা, তাঁদের প্রয়োজন, তাঁদের আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং প্রত্যাশাকে দেখে তৈরীর চেষ্টা করা হয়েছে। পাঁচ বছর ধরে সারা দেশে, প্রত্যেক স্তরে এর প্রতিটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত বিতর্ক এবং আলাপ-আলোচনা চলেছে। তারপর এই নীতি রচনা করা হয়েছে।

এটি প্রকৃত অর্থে সমগ্র ভারতকে, ভারতের স্বপ্নকে, ভারতের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে নিজের মধ্যে ধারণ করে নতুন ভারতের শিক্ষানীতি হয়ে উঠেছে। এতে প্রত্যেক ক্ষেত্রে, প্রত্যেক রাজ্যের বিদ্বানদের ভাবনা-চিন্তাকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। সেজন্য এটি নিছকই একটি নীতির নথি নয়, ১৩০ কোটিরও বেশি ভারতবাসীর আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনও বটে।

বন্ধুগণ, আপনারাও নিজেদের চারপাশে দেখে থাকবেন, আজও অনেক শিশুকে এমন কিছু বিষয়ের ভিত্তিতে বিচার করা হয়, যেগুলিতে তাদের কোন আগ্রহ নেই। বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, তাদের বন্ধুবান্ধব, সম্পূর্ণ পরিবেশের চাপ থাকে। ফলে তারা অন্যদের দ্বারা নির্বাচন করা বিষয় নিয়ে পড়তে থাকে। এই দৃষ্টিকোণ দেশের একটি বড় জনসংখ্যাকে এমনভাবে বড় করে তোলে। যার ফলে, তারা শিক্ষিত হন বটে কিন্তু তাঁরা যা পড়েছেন তার অধিকাংশই তাঁদের জীবনে কোন কাজে লাগে না। অনেক ডিগ্রি অর্জন করেও তাঁরা নিজেদের মধ্যে একটি আশ্চর্য অসম্পূর্ণতা অনুভব করেন। তাঁদের ভেতরে যতটা আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠা উচিৎ ছিল, যে আত্মপ্রত্যয় জেগে ওঠা উচিৎ ছিল, তাঁরা সবসময়ই তার স্বল্পতা অনুভব করেন। এই অন্তঃসারশূণ্যতার প্রভাব তাঁদের সারা জীবনের যাত্রাপথকে প্রভাবিত করে।

আরও পড়ুন -  Mother: অভিনেত্রী কাজল আগারওয়াল মা হতে যাচ্ছেন

বন্ধুগণ, নতুন শিক্ষানীতির মাধ্যমে এই দৃষ্টিভঙ্গিকে বদলানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আগের ত্রুটিগুলি দূর করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় এখন একটি অত্যন্ত সুসংহত সংস্কার, শিক্ষার উদ্দেশ্য এবং বিধেয় উভয়কে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

বন্ধুগণ, একবিংশ শতাব্দী জ্ঞানের শতাব্দী। এখন আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনের দিকে চালিত করার সময় এসেছে এবং এটাই ভারতের জাতীয় শিক্ষানীতি, ২০২০-র প্রকৃত উদ্দেশ্য। এই নীতি ছাত্রদের স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিজ্ঞতাকে আরও উদার ও ফলপ্রসূ করে তুলতে চায় যা আপনাদের প্রাকৃতিক ভালোবাসা বা ঝোঁকের দিকে তাঁদের জীবনকে পরিচালিত করার সুযোগ দেবে।

বন্ধুগণ,

আপনারা ভারতের শ্রেষ্ঠ এবং উজ্জ্বলতম ছাত্রছাত্রীদের অন্যতম। এই প্রথমবার আপনারা এরকম কোনও হ্যাকাথনে এসে কোন সমস্যার সমাধান করছেন না। আর এটি আপনাদের শেষবারও নয়। আমি চাই, আপনারা, দেশের নবীন প্রজন্ম তিনটি ক্ষেত্রে কখনই থেমে থাকতেন না। সেগুলি হল – শিক্ষা, প্রশ্ন তোলা এবং সমাধান করা।

আপনারা যখন শিখবেন, তখনই আপনারা প্রশ্ন তোলার প্রজ্ঞা আহরণ করবেন। যখন আপনারা প্রশ্ন তুলবেন, তখন আপনারা প্রচলিত পন্থাগুলির বাইরে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন। আর যখন আপনারা তা করবেন, তখনই আপনাদের আত্মিক উন্নতি হবে। আপনাদের প্রচেষ্টায় আমাদের দেশও উন্নত হবে। আমাদের পৃথিবী সমৃদ্ধ হবে।

বন্ধুগণ, ভারতের নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই ভাবনাগুলিরই প্রতিফলন রয়েছে। আমরা শিশুদের নরম পিঠে স্কুলের ব্যাগের বোঝার দিনগুলি, যা অধিকাংশ শিশুকেই স্কুলের সীমানার বাইরে পৌঁছতে দেয় না,; আমরা তা থেকে অন্যদিকে যেতে চাইছি। যে শিক্ষা ছাত্রছাত্রীদের জীবনের পথে সাহায্য করবে, কঠিন কঠিন বিষয়গুলিকে বছরের পর বছর ধরে অযথা মুখস্থ করার পরিবেশ থেকে বের করে আনবে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার এই সীমাবদ্ধতাগুলি দীর্ঘকাল ধরে ছাত্রছাত্রীদের জীবনে প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে। আমরা আর সেদিন ফিরে পেতে চাই না। আমাদের জাতীয় শিক্ষানীতি নবীন প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়ে উঠেছে। এটি কখনই প্রক্রিয়া-কেন্দ্রিক নয়। এটি জনগণ-কেন্দ্রিক এবং ভবিষ্যৎ-কেন্দ্রিক।

বন্ধুগণ,

এই শিক্ষানীতির সবচাইতে মজার দিক হল এটি বিভিন্ন আন্তঃবিষয়ক শিক্ষাকে গুরুত্ব দেয়। এই ভাবনা, যতদিন যাচ্ছে ততবেশি জনপ্রিয় হচ্ছে, এবং যথাযথভাবেই একই আকারের পোশাক সবার গায়ে লাগে না। আপনি কী — তাকে একটি নির্দিস্ট বিষয় কখনও সংজ্ঞায়িত করতে পারে না। কোন কিছু নতুন আবিষ্কার করার কোন সীমা থাকা উচিৎ নয়। মানবসভ্যতার ইতিহাসে এরকম অনেক কৃতিদের উদাহরণ রয়েছে যাঁরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের পরিচয় দিয়েছেন। আমাদের আর্যভট্ট থেকে শুরু করে লিয়োনার্দো-দ্য-ভিঞ্চি, হেলেন কেলার থেকে শুরু করে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। কিছু ক্ষেত্রে এখন আমরা কলা, বিজ্ঞান এবং বাণিজ্য শাখার ঐতিহ্যগত সীমা ভেঙে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কেউ যদি চান তাহলে তিনি অঙ্ক এবং সঙ্গীত একসঙ্গে শিখতে পারেন, অথবা কোডিং আর রসায়ন একসঙ্গে। একজন ছাত্রের কাছে সমাজ কী চায় সেটা নয়, সে নিজে যা যা শিখতে চায় তা যেন বিষয় হিসেবে নিতে পারে, নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তা সুনিশ্চিত করবে। আন্তঃবিষয় শিক্ষা আপনার হাতে নিজের জীবনের নিয়ন্ত্রণ এনে দেবে। এই প্রক্রিয়ায় আপনি নিজেও নমনীয় হয়ে উঠবেন।

আরও পড়ুন -  Arpita Mukherjee: বান্ধবী অর্পিতা, ফাঁসিয়ে দিলেন পার্থকে

নতুন জাতীয় শিক্ষানীতিতে এই নমনীয়তাকেই সবচাইতে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এতে বহুমুখী প্রবেশ এবং প্রস্থানের ব্যবস্থা থাকবে। ছাত্রদের জন্য নির্দিষ্ট কোন একমুখী পথ নয়। আন্ডার-গ্র্যাজুয়েট পর্যায়েপড়াশোনার অভিজ্ঞতা তিন বছর কিংবা চার বছরের হতে পারে। ছাত্ররা অ্যাকাডেমিক ব্যাঙ্ক অফ ক্রেডিটের সুবিধা নিতে পারবেন, যেখানে সমস্ত অর্জিত অ্যাকাডেমিক ক্রেডিটকে একত্রিত করা হবে। এই ক্রেডিটগুলিকে ফাইনাল ডিগ্রির সময় যোগ করা হবে। দীর্ঘকাল ধরে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই নমনীয়তার প্রয়োজন ছিল। আমি আনন্দিত যে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি এই প্রয়োজনগুলিকে বাস্তবায়িত করেছে।

বন্ধুগণ, জাতীয় শিক্ষানীতি প্রাথমিক শিক্ষা থেকেই ছাত্রছাত্রীর জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এর লক্ষ্য হল গ্রস এনরোলমেন্ট রেশিওকে ২০৩৫ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি করা, অর্থাৎ, আজকের থেকে প্রায় দেড়গুণ ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের পর পড়াশোনা করবে। তাছাড়া, জেন্ডার ইনক্লুশন ফান্ড, স্পেশাল এডুকেশন জোন-এর পাশাপাশি, দূরশিক্ষার বিকল্পও খোলা রাখা হচ্ছে যা কর্মরত ছাত্রছাত্রীদের খুব কাজে লাগবে।

বন্ধুগণ, আমাদের সংবিধানের প্রধান শিল্পী, আমাদের দেশের মহান শিক্ষাবিদ বাবাসাহেব আম্বেদকর বলতেন, শিক্ষা এমন হওয়া উচিৎ যা সকলের নাগালের মধ্যে থাকবে, আবার সকলের জন্য সুলভ হবে। এই নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি তাঁর এই ভাবনার প্রতি সমর্পিত। এই শিক্ষানীতি চাকরি অন্বেষণকারীদের জায়গায় চাকরি সৃষ্টিকারী গড়ে তোলার দিকে জোর দেবে। অর্থাৎ,, এক প্রকার এটি আমাদের ভাবনায়, আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আনার একটি প্রচেষ্টা। এই নীতিতে এমন আত্মনির্ভর যুব সম্প্রদায় গড়ে তোলার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হবে, যাঁরা এটা ঠিক করতে পারবেন যে তাঁদের কী কাজ করতে হবে, তাঁরা পরিষেবা দেবেন নাকি শিল্পোদ্যোগী হয়ে উঠবেন।

বন্ধুগণ,

আমাদের দেশে ভাষা সর্বদাই একটি সংবেদনশীল বিষয়। এর একটি বড় কারণ হল আমাদের দেশের স্থানীয় ভাষাগুলিকে দুয়োরানি করে রাখা হয়েছে। তাদের অঙ্কুরিত হওয়ার এবং এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুব কম দেওয়া হয়েছে। এখন শিক্ষানীতিতে যে পরিবর্তন আনা হয়েছে, তার ফলে ভারতের ভাষাগুলি এগিয়ে যাবে, তাদের আরও উন্নতি হবে। এই পরিবর্তন ভারতের জ্ঞানকে তো বাড়াবেই, ভারতের ঐক্যকেও সুদৃঢ় করবে। আমাদের ভারতীয় ভাষাগুলিতে কত না সমৃদ্ধ সাহিত্য রয়েছে। কত শতাব্দীর জ্ঞান রয়েছে, অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন এই সবকিছু আবার নতুন করে বিকশিত হবে। এর মাধ্যমে বিশ্ববাসী ভারতের সমৃদ্ধ ভাষাগুলির সঙ্গে পরিচিত হবেন। আর একটি বড় লাভ এটা হবে যে ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের জীবনের গোড়ার দিকে মাতৃভাষাতেই শিক্ষালাভের সুযোগ পাবেন।

এর ফলে, আমার মনে হয় তাঁদের মেধা আরও ফলে-ফুলে ভরে ওঠার সুযোগ পাবে। তাঁরা সহজভাবে কোন চাপ ছাড়া নতুন নতুন বিষয় শিখতে প্রেরণা পাবেন, আর শিক্ষার সঙ্গে জুড়ে যাবেন। এমনিতে আজ জিডিপি-র ভিত্তিতে বিশ্বের ২০টি শ্রেষ্ঠ দেশের তালিকার দিকে যদি তাকান, তাহলে দেখবেন সেগুলির মধ্যে অধিকাংশ দেশই তাদের ছাত্রছাত্রীদের মাতৃভাষাতেই শিক্ষা দেয়। এই দেশগুলি তাদের নবীন প্রজন্মের ভাবনা-চিন্তাকে মাতৃভাষায় বিকাশিত করে আর বিশ্বের সঙ্গে মতবিনিময়ের জন্য অন্য ভাষা শিক্ষার ওপরও জোর দেয়। এই নীতি এবং রণনীতি একবিংশ শতাব্দীর ভারতের জন্যও অত্যন্ত উপযোগী হয়ে উঠতে পারে। ভারতের কাছে তো অসংখ্য ভাষার অতুলনীয় সম্ভার রয়েছে, যা শেখার জন্য একটি জীবন কম পড়ে যায়। আর আজ বিশ্ববাসীও এই সম্ভারের রস আস্বাদনের জন্য লালায়িত।

আরও পড়ুন -  এই সব অ্যাপগুলি ডিলিট না করলে ফাঁকা হতে পারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, লুকিয়ে রয়েছে ফোনে

বন্ধুগণ, নতুন শিক্ষানীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। সেটি হল, এতে ‘লোকাল’কে যতটা গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, ততটাই ‘গ্লোবাল’-এর সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ওপরও নজর দেওয়া হয়েছে। আর যেখানে একদিকে স্থানীয় লোকসংস্কৃতি ও জ্ঞান, অন্যদিকে ধ্রূপদী সংস্কৃতি ও জ্ঞানকে স্বাভাবিক স্থান দেওয়ার অবকাশ রয়েছে, তেমনই বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলিকে ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খোলার আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। এর ফলে, আমাদের যুব সম্প্রদায় ভারতেই বিশ্বমানের জ্ঞান লাভের সুযোগ-সুবিধা পাবেন আর বিশ্বমানের প্রতিযোগিতার জন্য অনেক বেশি প্রস্তুতি নিতে পারবেন। ফলে ভারতে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে, ভারতকে আন্তর্জাতিক শিক্ষার হাব করে তুলতেও অনেক বেশি সুবিধা হবে।

বন্ধুগণ, দেশের যুবশক্তির ওপর সর্বদাই আমার অনেক ভরসা ছিল। কেন এই ভরসা তা দেশের যুবশক্তি বারবার প্রমাণ করে দিয়েছে। সম্প্রতি করোনার প্রতিরোধের জন্য ফেস শিল্ডস-এর চাহিদা হঠাৎ করে বেড়ে গিয়েছিল। এই চাহিদাকে ত্রিমাত্রিক প্রিন্টিং টেকনলজির মাধ্যমে বাস্তবায়িত করার জন্য দেশের বড় সংখ্যক যুবক এগিয়ে এসেছেন। ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জামের জন্য দেশে যে মানের নবীন উদ্ভাবক ও নবীন উদ্যোগপতিরা এগিয়ে এসেছেন, তা এখন সারা বিশ্বে আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। আরোগ্য সেতু অ্যাপ রূপে নবীন ডেভেলপার্সরা কোভিড ট্র্যাকিং-এর জন্য দেশকে অত্যন্ত কম সময়ে একটি অসাধারণ মাধ্যম উপহার দিয়েছেন।

বন্ধুগণ, আপনাদের মতো নবীনরাই ভারতের আত্মনির্ভরতার প্রত্যাশার মূল প্রাণশক্তি। দেশের গরীবদের একটি উন্নত জীবনযাত্রার মান উপহার দিতে, আমাদের ‘ইজ অফ লিভিং’-এর লক্ষ্য বাস্তবায়িত করতে আপনাদের মতো নবীন প্রজন্মের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমি সর্বদাই এটা মনে করি যে দেশের সামনে যত সমস্যাই আসুক না কেন, আমাদের নবীন প্রজন্ম তার মোকাবিলা করতে এবং তার সমাধান খুঁজে বের করতে সক্ষম। প্রত্যেক প্রয়োজনের সময়ে যখনই দেশ তার নবীন উদ্ভাবকদের দিকে তাকিয়েছে, তাঁরা কখনও হতাশ করেনি।

‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন’-এর মাধ্যমেও বিগত বছরগুলিতে অসাধারণ সব উদ্ভাবন দেশকে সমৃদ্ধ করেছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এবারের হ্যাকাথনের পরেও আপনারা দেশের প্রয়োজনগুলি বুঝে দেশকে আত্মনির্ভর করে তুলতে নতুন নতুন সমাধানের কাজ করে যাবেন।

আরেকবার আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই।

অনেক অনেক ধন্যবাদ। সূত্র – পিআইবি।