১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে হেরে গিয়েছিলেন বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা৷ সেই যুদ্ধে ব্রিটিশদের যাঁরা সহায়ক ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাজা নবকৃষ্ণদেব৷ জয়ের আনন্দেই সে বছর নিজের বাড়িতে দুর্গাপুজো করেন তিনি৷
সে বছর পুজোর অন্যতম অতিথি ছিলেন লর্ড ক্লাইভ। এখনও সেই পরম্পরা মেনেই পুজোর আয়োজন হয় এখানে৷ শিকাগো বক্তৃতার পর স্বামী বিবেকানন্দকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছিল এই বাড়ির নাটমন্দিরেই৷ রাজা নবকৃষ্ণের আদি বাড়ি ছিল এটি৷ পরে তিনি পোষ্যপুত্র গোপীমোহনকে এই বাড়িটি দান করে নিজে নতুন বাড়িতে উঠে যান৷ এত গুণীজনের সমাবেশ হত নাটমন্দিরে, অথচ বাইরে আসার হুকুম ছিল না বাড়ির মেয়েদের৷ পর্দানশীন অন্তঃপুরিকাগণ শুধুমাত্র অষ্টমীর দিনে চিকের আড়াল থেকে প্রতিমা দেখে অঞ্জলি দিতেন৷
সে সময় সারা দেশ থেকে আসতেন বত্রিশজন শাস্ত্রজ্ঞ ব্রাহ্মণ৷ কৃষ্ণা নবমী তিথি থেকে তারা শুরু করতেন চণ্ডীপাঠ, সেই পাঠ শেষ করতে হত ষষ্ঠীর দিন৷ এখনও হয় ২১০ বার চণ্ডীপাঠ৷ কাশী থেকে ব্রাহ্মণরা এসে বেদ এবং রামায়ণ পাঠ করেন৷ একবার পুজোর বলির জন্য উৎসর্গ করা পশু আশ্রয় নেয় পরিবারের তৎকালীন কর্তা হিন্দুকুলচূড়ামণি রাধাকান্ত দেবের পায়ের তলায়৷ সে বছর থেকে পশুবলি বন্ধ হয়ে যায় শোভাবাজার বাড়িতে৷ তখনকার প্রথা মেনে আজও নানা ধরনের ভাজা আর মিষ্টি দিয়ে হয় মায়ের ভোগ৷ বাড়িতে ভিয়েন বসিয়ে তৈরি হয় মিষ্টি৷ রাজবাড়ির প্রসাদ নিতে আসেন দূর-দূরান্তের মানুষ৷ সূত্রঃ সংগৃহীত।