খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শ্রীল ভক্তি বেদান্ত স্বামী প্রভূপাদজি ১২৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি বিশেষ স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করেন। অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি পর্যটন ও উত্তর – পূর্বাঞ্চলীয় উন্নয়ন মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি সহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিন আগেই ছিল জন্মাষ্টমী। আজ শ্রীল প্রভূপাদজি ১২৫তম জন্মবার্ষিকী এই দিনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। সাধনা যোগের সঙ্গে আনন্দ অর্জন মিলে মিশে গেছে। আজাদি কা অমৃত মহোৎসবের মধ্যেই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। শ্রীলো প্রভূপাদ স্বামী এবং কৃষ্ণ ভক্ত লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ এই দিনটি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উদযাপন করছেন।
শ্রী মোদী বলেন, ভগবান কৃষ্ণের জন্য প্রভুপাদ স্বামীর অতিপ্রাকৃত নিষ্ঠা ছিল। তিনি ছিলেন ভারতের এক মহান অনুসারী। তিনি দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নিয়েছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনকে সমর্থন করে স্কটিস কলেজ থেকে তিনি তার ডিপ্লোমা গ্রহণ করেন নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগের বিষয়ে আমাদের জ্ঞান সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে হবে। ভারতের স্থিতিশীল জীবনযাত্রা, আয়ুর্বেদের মতো বিজ্ঞানকে সারা বিশ্বে পরিচিত করাতে হবে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সারা বিশ্ব যাতে এর থেকে উপকৃত হয়, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করবো। যখনই আমরা কোনো দেশে যাই এবং সেখানকার লোকেরা আমাদের হরে কৃষ্ণ বলে সম্বোধন করেন। আমরা একাত্ততা এবং গর্ব অনুভব করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন মেক ইন ইন্ডিয়ার পণ্য সামগ্রী সেই সব দেশে দেখা যায়, তখনও একই অনুভূতি হয়। আমরা এই মর্মে ইস্কনের থেকে অনেক কিছু শিখতে পারি।
শ্রী মোদী বলেন, দাসত্বের সময়ে ভক্তি ভারতের চেতনাকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আজ পণ্ডিত ব্যক্তিরা বলেন, যদি ভক্তি যুগের সামাজিক বিপ্লব ছাড়া ভারতের অবস্থা কি হত এবং কি ভাবে তার স্বরূপ প্রকাশিত হত সেটি কল্পনা করাই কষ্টসাধ্য। ভক্তি আস্থা, সামাজিক এবং অগ্রাধিকারের বৈষম্যকে সরিয়ে ঈশ্বরের সঙ্গে জীবের মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। চৈতন্য মহাপ্রভূর মতো সন্ন্যাসীরা যাঁরা ভক্তি চেতনায় সমাজকে আবদ্ধ করেছিলেন এবং আস্থা ও বিশ্বের মন্ত্র দিয়েছিলেন, তাঁদের কাছেও সেই সময় অত্যন্ত কঠিন ছিল।
শ্রী মোদী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দের মতো সন্ন্যাসীরা যখন বেদান্তকে পশ্চিমে নিয়ে যায়, সেই সময়ে শ্রীল প্রভূপাদ এবং ইস্কন ভক্তি যোগকে পৃথিবীর কাছে পৌঁছে দেবার মহান কার্য শুরু করে। তিনি ভক্তি বেদান্তকে বিশ্বের চেতনার সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন আজ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ইস্কনের শত শত মন্দির এবং গুরুকূল ভারতীয় সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। আস্থার অর্থ উৎসাহ উদ্দীপনা এবং আনন্দ আর মানবতার মধ্যেই বিশ্বাস অন্তর্নিহিত রয়েছে, এই বাণী ইস্কন ভারতের জন্য সারা পৃথিবীতে প্রচার করেছে। তিনি কচ্ছের ভূমিকম্প, উত্তরাখন্ডে বিপর্যয় এবং ওডিশা ও পশ্চিমবঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ইস্কন যে পরিষেবা দিয়েছে, তার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, মহামারীর সময়েও এই সংস্থার ভূমিকা অত্যন্ত প্রশংসনীয়।
ইস্কন এবং সংস্কৃতি মন্ত্রক যৌথভাবে এই অনুষ্ঠান আয়োজন করে। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী জি কিষাণ রেড্ডি স্বাগত ভাষণে বলেন, ভারতবর্ষ মহাপুরুষদের জন্মভূমি। যাঁরা শত শত মানুষকে জীবনের সঠিক পথ অনুসরণ করার শিক্ষা দিয়েছেন এবং মানব সেবায় নিয়েজিত ছিলেন। ইস্কনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এই সংস্থা বিশ্বে খাদ্য বিতরণের জন্য বিখ্যাত। তিনি নিজে দিল্লির দ্বারকায় ইস্কনের বিশাল রান্নাঘর ঘুরে দেখেন। সেখানে ৪ লক্ষ মানুষের রান্না হয়। প্রতিদিন যথাযথভাবে রান্না করা খাবার বন্টন করা হয়। ইস্কন এবং তার সহযোগী সংস্থাগুলি সরকারের সঙ্গে একযোগে ৭২টি রান্নাঘর থেকে ২৫ কোটির বেশি মানুষকে খাদ্য সরবরাহ করেছে। ইস্কনের ‘জীবনের জন্য খাদ্য কর্মসূচী বিশ্বে বৃহত্তম খাদ্য বিতরণ প্রকল্প। সূত্রঃ পিআইবি।