খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বহু ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুর্গাপুরের প্রাচীন জনপদ নডিহার আটবাড়ি। একসময় নডিহার জমিদার মুখোপাধ্যায় পরিবারের আট পুত্রের বাসস্থান ছিল এই আটবাড়ি।এই জমিদার পরিবারের ওপর ব্রিটিশ শাসকরা সব সময় ঈগলের চোখ করে থাকতো।বাংলার স্বাধীনতার ইতিহাসে খুব একটা পরিচিতি না পেলেও বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গোপন আস্তানা ছিল এই নডিহা আটবাড়ি। জমিদার দুর্গাচরণের নামনুসারে নামাঙ্কিত এই নডিহা আটবাড়ি।নডিহা সহ বেশ কয়েকটি এলাকা জুড়ে তৈরি হয়েছে দুর্গাপুরের এই জমিদার বাড়ি।নডিহার তারকনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দুর্গাচরণের দিদির বিবাহ হয়। তাঁদের আট পুত্র সন্তানের জন্য নির্মিত হয়েছিল দূর্গাপুরের এই জমিদার আটবাড়ি।পরবর্তকীকালে এই আটবাড়ি স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সংস্পর্শে এসে ধন্য হয়। বর্ধমানের রাজ পরিবারের অধীনে ছিল নডিহার জমিদারবাড়ি।
স্বাধীনতা আন্দোলনের সময়ও দুর্গাপুর ঘন জঙ্গলে ঢাকা ছিল। ফলে এই এলাকা গা ঢাকা দেওয়ার জন্য ছিল আদর্শ একটি জায়গা। তাই স্বাধীনতা সংগ্রামীরা আত্মগোপনের জন্য বারবার এসে আশ্রয় নিয়েছেন আটবাড়িতে।আটবাড়ির গঠনমূলক বৈশিষ্টের জন্য ব্রিটিশ সৈন্যরা কখনও আটবাড়ির চৌহদ্দিতে কোনও স্বাধীনতা সংগ্রামীর টিকি ছুঁতে পারেনি। তবে বর্তমানে আটবাড়ির খুব কম সদস্য এখানে থাকেন।এই জমিদার বাড়ির বেশিরভাগ বংশধররা দুর্গাপুরের অন্য জায়গায় বাড়ি বানিয়ে চলে গিয়েছেন। অনেকের আবার কলকাতায় চলে এসেছেন।এই বংশের বেশকিছু সদস্য চাকরি সূত্রে এখন বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। ফলে স্বাধীনতার বহু অজানা ইতিহাসের সাক্ষী এই আটবাড়ি দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভগ্নপ্রায় অবস্থায় পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে তারকনাথ মুখোপাধ্যায়ের আট সন্তান পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন।আটবাড়ির অন্যতম সদস্য শরৎচন্দ্র মুখোপাধ্যায় ছিলেন ব্রিটিশ আমলের আইনজীবী। সেই সময় সারা দেশব্যাপী ব্রিটিশ রাজত্ব চললেও, কখনও তাদের কাছে মাথা নত করেননি শরৎচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।বাংলার রূপকার বিধান চন্দ্র রায় একটা সময় এই পরিাবরের পারিবারিক চিকিৎসক ছিলেন।দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরুর সঙ্গেও নিবিড় সম্পর্ক ছিল আটবাড়ির সদস্যদের। এমনকি রাজবাড়ীর সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন প্রফুল্ল সেন।