খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ তৃতীয় বিকল্প এখনই নয় বরং যদি বিজেপি কে সরাতে হয় তাহলে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে হবে। একটি বড় বিকল্প তৈরি করে, ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিয়ে সঠিক ফর্মুলা তৈরি করে তারপরেই নামতে হবে। দলের মুখপত্র জাগো বাংলা শনিবার এরকমই একটি সম্পাদকীয় লেখা হলো তৃণমূলের তরফে। এই সম্পাদকীয় প্রকাশিত হওয়ার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তাহলে কি তৃতীয় বিকল্পে আস্থা হারাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস ? ধীরে ধীরে সম্ভাবনা আরও জোরদার হচ্ছে।
এই আর্টিকেলের ছত্রে ছত্রে কংগ্রেসের বেশ কিছু পরিকল্পনার সমালোচনা করা হয়েছে, কিন্তু তবুও বিজেপিকে সরাতে কংগ্রেসের হাত ধরতে যে তৃণমূল কংগ্রেস সম্পূর্ণরূপে আগ্রহী সেটা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ঠারে ঠারে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্প্রতি করা দিল্লি সফর ছিল রাজনৈতিক মহলের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে কথা বললেও জাতীয় রাজনীতিতে সবথেকে বেশি আলোচিত হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সোনিয়া গান্ধীর বৈঠক। রাজনৈতিক মহলের ধারণা সোনিয়া এবং মমতার ওই বৈঠক থেকেই বিরোধী ঐক্য তৈরি করার ব্লু প্রিন্ট তৈরি হয়ে যায়।
আর এইদিনের সম্পাদকীয় যেন সেই বার্তা আরো ভালোভাবে স্পষ্ট করতে শুরু করলো। তবে তৃণমূল খুব ভালোভাবে জানে, বিজেপিকে যদি সরাতে হয় তাহলে শুধুমাত্র ঐক্যবদ্ধ হলেই হবে না, বরং লাগবে সঠিক স্ট্র্যাটেজি এবং সঠিক ফর্মুলা। তার সাথেই লাগবে সঠিক নেতা নেত্রীদের। জোট করার আগেও এখন ভিত মজবুত করা আরো জরুরি। এই কারণেই এ দিনের আর্টিকেলের স্পষ্টভাবে লেখা হয়েছে, “আমরা দেশের স্বার্থে, অ-বিজেপি, গণতান্ত্রিক এবং ধর্মনিরপেক্ষ দলের পক্ষে। সংসদের ভিতরে এবং বাইরে আমাদের বিজেপি বিরোধী ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু আমরা চাই একটা নির্দিষ্ট নীতি বা পদ্ধতিতে ঐক্য হোক। আজ হঠাৎ মনে হল, একটা ফোনে বলে দিলাম আমরা মিছিল করছি চলে আসুন, এটা কিন্তু তৃণমূলের ক্ষেত্রে চলবে না। ”
মা-মাটি-মানুষের অফিশিয়াল মুখপত্র জাগো বাংলায় এরকম একটি আর্টিকেল আসার পরেই বিরোধী ঐক্যের বিষয়টি আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে জোট ছাড়া একাই বিজেপিকে হারিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তাই এবারে জাতীয় স্তরে একসাথে বাকি দলগুলো সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বিজেপিকে পরাস্ত করতে কোমর বেঁধে নেমে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের কাছে বাকি দলগুলো গুরুত্ব রয়েছে, এবং একথা উল্লেখ করেই অতীতে ভুলের কথা তুলে ধরেছে তৃণমূল। নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে রাজ্যে সিপিএম এর সঙ্গে জোট বেঁধেও কংগ্রেসের নিট ফল শূন্য, এ কথা উঠে এসেছে। অন্য রাজ্যে শুধুমাত্র নিজেদের ভুলেই ক্ষমতা বিস্তার করতে পারেনি কংগ্রেস। কিন্তু, বিজেপি কে সরাতে কংগ্রেসের মতো একটি বড় রাজনৈতিক দলের সঙ্গ নেওয়াটা প্রয়োজন। তাই তৃণমূল দাবি করেছে, অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজের ভুল শুধরাতে হবে। জোটের কারিগরি প্রযুক্তি বদলে, জোটের ভিত শক্ত করা দরকার। জোটের আগে ফাঁকফোকর ভরাট করে লড়াইয়ের ময়দানে নামতে হবে। আর এই জন্যই, জাতীয় স্তরে ঐক্য প্রয়োজন, যাতে আমরা হয়তো একসাথে দেখতে পাব কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসকে। এখন অপেক্ষা আগামী লোকসভা নির্বাচনের।