খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বোলপুরের সার্কিট হাউসে হঠাৎ করেমুখোমুখি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডল। প্রায় দু’ঘণ্টা আলাপচারিতা হলো পরমব্রত এবং অনুব্রতর মধ্যে। এক টেবিলে পাশাপাশি বসে দুপুরের খাওয়া – দাওয়া করলেন, পাশাপাশি সাংবাদিকদের সামনে বীরভূমের কেষ্টকে প্রশংসা করলেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বললেন, “অনুব্রত মণ্ডল একজন কাজের মানুষ। তিনি মজার মানুষও বটে।” তাহলে কি খাবার টেবিলেই রং বদলানোর আলোচনা করে ফেললেন বামপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়? রাজনৈতিক মহলে দুই ব্রতর সাক্ষাতের পর উঠছে প্রশ্ন।
অভিনেতা নিজে যদিও এই জল্পনা সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক ভাবাদর্শ বিশ্বাসী থাকলেও তিনি সম্পূর্ণরূপে দলীয়রাজনীতি নিয়ে কোন কিছু ভাবেন না কখনো। এবারের বিধানসভা নির্বাচনে যখন একের পর এক তারকা নিজেদের রং চেনাতে ব্যস্ত ছিলেন সেই সময়ে পরমব্রত রয়ে গিয়েছিলেন একেবারেই রংহীন। কিন্তু ভোট পরবর্তীতে বিজেপি বিরোধী মোর্চা ধীরে ধীরে শক্ত হচ্ছে। বামপন্থীরা ও আবার অনেকে বিশ্বাস করছেন তৃণমূলের সঙ্গে জোট করা যেতে পারে যদি বিজেপি কে হারাতে হয়। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বামপন্থী ভাবাদর্শে বিশ্বাসি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের অনুব্রত মন্ডল এর সঙ্গে আলাপ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি কি তাহলে রাজনৈতিক দলে যোগদান করতে পারেন ভবিষ্যতে কখনো? এই সম্ভাবনা কিন্তু একেবারে উড়িয়ে দেননি পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়।
পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বললেন, “রাজনীতিতে যোগ দেওয়া বা না দেওয়ার সেই নিয়ে এখন জল্পনা করার কোন প্রয়োজন নেই।” কিন্তু জল্পনা যে হচ্ছে সেটা তিনিও খুব ভালো করেই জানেন। তবে শুধুমাত্র অনুব্রত এখন পরমব্রত একা নয়, এই বৈঠকে তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক তথা অনুব্রত মণ্ডলের ডানহাত অভিজিৎ মন্ডল, বীরভূমের জেলা শাসক বিধান রায়, এবং বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র নাথ ত্রিপাঠী। পরমব্রত যদিও নিজে জানিয়েছেন বোলপুরে একজন বন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখানে একটি সমস্যা হওয়ার পরেই অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করার কথা হয়। তারপর তিনি নিজেই সার্কিট হাউসে তাকে আমন্ত্রণ করেন।
এই দীর্ঘ আলোচনার পরে তৃণমূলে যোগদান এর কোনো সম্ভাবনা রয়েছে ? এই প্রশ্নের উত্তরে যদিও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ” এটা নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাতকার। আমি মাঝেমধ্যে এখানে এসে থাকি। আমি এবারেও ঘুরতে এসেছিলাম। কিছু ব্যক্তিগত কাজ ছিল, তাই এখানে দেখা করতে আসা। উনি নিজেই বললেন আসুন দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করি। এই কারণেই আসা। এটা শুধুমাত্র একটা সৌজন্য সাক্ষাতকার। পরস্পরের সঙ্গে শুধুমাত্র কুশল বিনিময় করেছি আমরা।” রাজনীতিতে আসছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পরমব্রতর সাফ কথা, ” বিধানসভা ভোটের আগে তো অনেকেই এদিক-ওদিক গিয়েছেন। আমি অনেকদিন ধরেই যাইনি। আমার নিজস্ব রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনা অবশ্যই রয়েছে কিন্তু সেটা সরাসরি দলের হয়ে নয়। আজকে পুরোপুরি একটা সৌজন্য সাক্ষাতকার ছিল। শুধুমাত্র দুজনের মধ্যে কুশল বিনিময় করেছি আমরা। এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া বা না দেওয়ার কোনো কিছুর কোন সম্পর্ক নেই। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করতে আসিনি। তাই কোন রকম জল্পনা করার প্রয়োজন নেই।”