খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যসভায় আপাতত দুটি আসন খালি রয়েছে, তার একটি আসনের জন্য নির্বাচনের দিনক্ষণ ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানা যাচ্ছে সেই আসনটি হলো প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী ছেড়ে যাওয়া আসন। আগামী ৯ আগস্ট এই আসনের নির্বাচন হওয়ার কথা।
দীনেশ ত্রিবেদী ছেড়ে যাওয়া ওই আসনে রাজ্যসভার প্রার্থী হিসেবে যেতে পারেন মুকুল রায়। তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে অনেকই আছেন। সূত্রের খবর তৃণমূলের রাজ্যসভার প্রার্থী হতে চলেছেন মুকুল। রাজ্যসভায় পাঠিয়ে বিজেপিকে নতুন করে চাপে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে শুরু করেছে তৃণমূল। এই কারণে মুকুল রায়কে তুরুপের তাস করার চেষ্টা করছে রাজ্যের শাসক দল। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এর সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে ফেলেছেন মুকুল রায়। তবে এই সাক্ষাৎ এর মূল কারণটি হলো, যদি তাকে রাজ্যসভায় প্রার্থী করা হয় তাহলে তাকে বিধানসভার বিধায়ক পদ ত্যাগ করতে হবে।
ইতিমধ্যেই তৃণমূল ভবনে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে মুকুল রায় বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে গেলে আরো একটি সমস্যা রয়েছে। যদি তিনি ছেড়ে যান তাহলে তাকে পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পদ ত্যাগ করতে হবে। রীতি অনুযায়ী বিধানসভার বিরোধী দলের নেতাকে এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। মুকুল রায় তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যোগ দেওয়ার পরে তাকে পাবলিক একাউন্ট কমিটির চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ করেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল বিজেপি। ইতিমধ্যেই তারা দলত্যাগ বিরোধী আইন কার্যকর করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য মুকুল রায় কে বিধায়ক পদে রেখে দেওয়াটা খুব একটা সহজ কাজ হবে না তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে। মুকুল রায় কে এখনই কোন জায়গায় পরিবর্তন না করা হয়, তাহলে পরে সমস্যা হতে পারে। এই কারণেই নতুন সমীকরণ তৈরি চেষ্টা করছে তৃণমূল কংগ্রেস। মুকুল রায় কে যদি রাজ্যসভায় পাঠানোর সম্ভব হয় তাহলে একদিকে যেমন রাজ্যসভায় বিজেপির বিরুদ্ধে একজন দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা চলে আসবেন।
মুকুল রায় যদি বিধানসভায় বিধায়ক পদ পরিত্যাগ করেন তাহলে লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া শিশির অধিকারী ও সুনীল মণ্ডল এর উপরে সাংসদ পদ খারিজের জন্য বিস্তর চাপ দেওয়া যাবে। একদিকে মুকুল রায় গেলেন রাজ্যসভায় বিজেপি বধে, অন্যদিকে লোকসভায় চাপে পড়ল বিজেপি। অর্থাৎ ১ এর বদলে ২। সমীকরণটা আরো এক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, ইতিমধ্যেই বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা হয়ে গিয়েছে ৭৫। তার মধ্যে আবার যদি মুকুল রায় বিধায়ক পদ ত্যাগ করেন তাহলে সেই সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়াবে ৭৪এ। রাজ্যসভায় মুকুল রায় সংসদীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করবেন। তার সঙ্গেই তৃণমূল কংগ্রেসের সংগঠন তৈরী দিকটা লক্ষ্য রাখবেন। কৃষ্ণনগর উত্তর আসনে যদি আবারও নির্বাচন হয় তাহলে তৃণমূল কংগ্রেসের জিতে আসার সম্ভাবনা প্রবল কারণ এই আসনে বিজেপি হওয়ার থেকেও বেশি কার্যকর ছিল মুকুল হাওয়া।এই কারণে শেষমেষ গিয়ে ক্ষতি হবে বিজেপিরই।