খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে এসে প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তারা কেউ সফল হয়নি। বিজেপি শিবিরের তাবড় তাবড় নেতারা পশ্চিমবঙ্গে এসে একাধিক জনসভা করে গিয়েছিলেন। এবারে তাদের পাল্টা গুজরাটে গিয়ে সংগঠন তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জানা যাচ্ছে, তৃণমূলের ঐতিহাসিক একুশে জুলাই এর বক্তৃতা সরাসরি গুজরাটে শোনানো হবে। দিদির সঙ্গে লড়াই করতে বাংলায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, এবারে সেই দিদি যাচ্ছেন তার গড়ে। গুজরাটে নিজের সংগঠন শক্ত করা শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গুজরাটের তৃণমূল কংগ্রেস সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস, গুজরাট প্রদেশ। গুজরাটের তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের চাঙ্গা করতে একুশে জুলাই প্রথম ভোকাল টনিক দিতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বড় বড় তাবড় তাবড় নেতাদের সঙ্গে একা লড়াই করেছিলেন বছর ৬৬ এর এই মহিলা। ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে শুরু করে একের পর এক দল বদল, বিশ্বস্ত নেতাদের তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান সবকিছুই ছিল এবারের বিধানসভা নির্বাচনে। এই সমস্ত প্রতিকূলতাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জনপ্রিয়তা এখনো পর্যন্ত বিজেপির সমস্ত নেতাদের থেকে অনেকটা বেশি বাংলায়। আগের দু’বছরের থেকে অনেকটা বেশি সিট নিয়ে এবারে ক্ষমতায় এসেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকেই টুইটার থেকে শুরু করে অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে ভাইরাল হতে শুরু করে বাঙালি প্রধানমন্ত্রী এবার দিদি।
রাজনৈতিক মহলের মতামত, এবারের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি কে একেবারে ধূলিসাৎ করে দেওয়ার পরে সারা ভারতে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তাই এবার সরাসরি বাংলা ছেড়ে জাতীয় রাজনীতিতে পা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এবারে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে একুশে জুলাই এর ভাষণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করছে তৃণমূল শিবির। তৃণমূলের তরফ থেকে ইতি মধ্যেই দিল্লিতে জায়েন্ট স্ক্রীন লাগিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর ভাষণ সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি যোগীরাজ্য উত্তর প্রদেশ, ত্রিপুরা, ঝারখন্ড, তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব ও অসমে এই ভাষণ সম্প্রচার হবে বলে জানানো হয়েছে।
সবথেকে তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার হলো এবারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাই এর সম্পূর্ণ ভাষণ শোনানো হবে মোদির গড় গুজরাটে। ইতিমধ্যেই গুজরাটি ভাষায় পোস্টার ছাপিয়ে পশ্চিমের বিভিন্ন রাজ্যে বিলি করা শুরু হয়েছে। পোস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে মোদি, অমিত শাহ এবং বিজেপির নেতাদের ব্যবহার করা সেই ‘দিদি’ স্লোগানটি। এইসব কারণেই জাতীয় রাজনীতিতে বর্তমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একুশে জুলাই এর ভাষণ সবথেকে সরগরম বিষয় হয়ে উঠেছে। এবারে পশ্চিমবঙ্গে ৩৩ টি জেলার মধ্যে ৩২ টি জেলায় শোনানো হবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণ। তার মধ্যে আবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নিজের জায়গা গুজরাটে ভাষণ দেবেন মমতা। চাপে গেরুয়া শিবির।