খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, ওয়েবডেস্কঃ চাকদহের বিপাশা দাস, ছোট চায়ের দোকান, চা বিস্কুট বিক্রি করে পুরো সংসারের জোয়ার টানেন। হাজার টানাপোড়েনের মধ্যেও গান করতে ভালোবাসেন। তিনি কারো কাছে গান শেখেননি, তাহলে? চায়ের দোকানের রেডিও আর টিভির পর্দায় গান শুনে শুনে সেই গানকে ভালবেসে গান শেখা। তাঁরই গাওয়া গানের ভিডিও নেটদুনিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়। গানের ভিডিও আপলোড হতেই রাতারাতি ভাইরাল সেই ভিডিও। মিউজিক ছাড়া তাঁর সুরের জাদু মন ভরিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের।
নদিয়ার চাকদহের গোসাই পাড়ার বাসিন্দা মাঝবয়সী গৃহবধূ বিপাশা দাস। স্বামীর কাজ নেই। সংসারের হাল ধরতে, পরিবারের মুখে দুমুঠো অন্ন তুলে দিতে, আর ছেলে মেয়েদের মানুষ করতে ছোট চায়ের দোকান। তবুও টিনের চালের স্বামী সন্তানকে নিয়ে সুখের সংসার। বৈবাহিক জীবনে অনেক কষ্ট যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে বিপাশা দেবীকে। চায়ের দোকান চালিয়েও নিজের প্রতিভাকে তুলে ধরার জন্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন বিপাশা দেবী। ভাঙ্গা ঘরে টালি চুইয়ে বৃষ্টির জল পড়লেও নিজের ইচ্ছেকে মরে যেতে দেননি। এই আকাঙ্ক্ষার কথা বুঝতে দেয়নি কখনো কাউকে। তবুও বাঁচিয়ে রেখেছেন নিজের প্রতিভাকে। লতা মঙ্গেশকরের সংগীতকে স্মরণ রেখে তারই সুরে চায়ের দোকান উনুনে চা বানাতে বানাতে চালিয়ে গান গেয়ে চলেছেন অবিরাম। তাঁর গাওয়া গানে নেই হারমোনিয়াম, সেতার কিংবা তানপুরা, শুধু মাত্র মনের আনন্দে অপূর্ব গান করেন। বিপাশার গাওয়া গানই হল তার অভাব জীবনে একমাত্র ভালো থাকার মন্ত্র। তিনি চাইছেন সংগীত জগতে কেউ তাকে একটু সুযোগ করে দিক। তাহলে তার প্রতিভা সকলের সামনে তুলে ধরতে পারবেন তিনি।
এখন সোশ্যাল মিডিয়াতে বেশ ভাইরাল। অনেকেই মন্তব্য করেছেন রানু মন্ডল যদি সুযোগ পায়, তিনি কেন পাবেন না। রানু যদি বলিউডে হিমেশের গান পাওয়ার সুযোগ পান, তাহলে তাঁর একটা সুযোগ পাওয়া উচিত। একটু ঘুরলেই দেখা যাবে বাংলার গ্রামে গঞ্জে বহু মানুষের মধ্যে লুকিয়ে আছে হাজারও প্রতিভা। গলায় সুর থাকলেও যোগাযোগের কম থাকায় নিজের সাফল্য পাচ্ছেনা অনেকেই। তেমনই একটি প্রতিভার জ্বলন্ত রুপ হল বিপাশা দাশ। তিনি মনে করেন একদিন সুযোগ পাবেন।