খবরইন্ডিয়াঅনলাইন, নয়াদিল্লিঃ কেন্দ্রীয় জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডব্য আজ ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে আগরতলা পর্যন্ত প্রথম কন্টেনার বোঝাই জাহাজের যাত্রার সূচনা করেছেন। বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের পণ্য পরিবহনের জন্য চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চুক্তির আওতায় এই পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।
অনুষ্ঠানে তার ভাষণে শ্রী মান্ডব্য বলেন, এই যাত্রাপথের সূচনার মধ্যে দিয়ে উভয় দেশের কাছে এক নতুন সুযোগের দরজা খুলে গেল। এটি বাংলাদেশের মাধ্যমে উত্তরপূর্ব অঞ্চলে সংযোগ স্থাপনের বিকল্প রাস্তা। এতে সময়ও কম লাগবে। শ্রী মান্ডব্য বলেন, ভারতে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরকে ব্যবহার করা একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। তিনি আরও বলেন, ভারত-বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হল।
এই পণ্যবাহী জাহাজে পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার জন্য দুই টিইইউ(কুড়ি-ফুট সমতুল্য ইউনিট) বহনে সক্ষম টিএমটি ইস্পাত এবং আসামের করিমগঞ্জের জন্য ডাল পাঠানো হয়েছে। এই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশী ট্রাকে করে আগরতলায় পন্য পৌঁছানো হবে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি শেখ হাসিনার ২০১৯এর অক্টোবরে ভারত সফরের সময় ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ-পর্যায়ে আলোচনার পর উভয় দেশের মধ্যে সমঝোতা অনুযায়ী বাংলাদেশ এবং ভারতের উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলির মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা জারদার করার প্রয়াস চালানো হয়েছিল। চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের জন্য স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর সমাপ্ত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে ট্রায়াল রান শুরু হয়। এই পণ্য পরিবহনের সূচনায় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে।
ভারতে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে সময় ও দূরত্ব কমে আসবে এবং উভয় দেশই আর্থিক দিক দিয়ে লাভবান হবে। এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে, পণ্য পরিবহণ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে, বাণিজ্যিক পরিষেবা বাড়বে এবং রাজস্ব খাতেও আয় বৃদ্ধি পাবে। এর সবকিছুর সুফল পাবে দুই দেশই। বাংলাদেশী জাহাজ ও ট্রাক ভারতীয় পণ্য পরিবহনে ব্যবহার করা হবে।
ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্প্রতি জাহাজ চলাচল এবং আভ্যন্তরীণ জলপথ ভিত্তিক বাণিজ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আভ্যন্তরীণ জল পরিবহন ও বাণিজ্য সম্পর্কিত নির্দিষ্ট নিয়মের আওতায় ৬টি চালু বন্দরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি উভয় দেশই আরও ৫টি করে বন্দর যুক্ত করেছে। নৌ-পরিবহনে আভ্যন্তরীণ জলপথ নির্মাণে বাংলাদেশকে সাহায্যও করছে ভারত। এ বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত এই প্রকল্পে ৮০ শতাংশ খরচ বহন করবে, বাকি ২০ শতাংশ খরচ দেবে বাংলাদেশ সরকার। পর্যটন এবং দুই দেশের মানুষের মধ্যে যোগাযাগ স্থাপনের বিষয়ে উৎসাহদানে ভারত-বাংলা দেশের মধ্যে ক্রুজ পরিষেবাও শুরু হয়েছে। সূত্র – পিআইবি।