১৬০ কিমি গতির ট্রেনে হাওড়া-দিল্লি সফর আরও দ্রুত, সফল ট্রায়াল দিল আশার আলো।
ভারতীয় রেল আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল উচ্চগতিসম্পন্ন ট্রেন পরিষেবার দিকে। এবার হাওড়া থেকে দিল্লি পৌঁছানো যাবে আরও দ্রুত, কারণ সফল হয়েছে ১৬০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিসম্পন্ন ট্রেনের ট্রায়াল। দিল্লি-হাওড়া রুটে এই পরীক্ষামূলক রানের সাফল্য যাত্রীদের জন্য এক নতুন দিশা দেখাচ্ছে।
পরীক্ষামূলক চলাচল: গতি ও নিরাপত্তা যাচাই
শুক্রবার, দিনদয়াল উপাধ্যায় জংশন থেকে ধানবাদ পর্যন্ত রুটে কোডারমা হয়ে চালানো হয় এই পরীক্ষামূলক ট্রেনটি। উপস্থিত ছিলেন রেলের বিভিন্ন শাখার আধিকারিকেরা। মূলত এই ট্রায়ালের উদ্দেশ্য ছিল রেললাইনের গতি সহনশীলতা, নিরাপত্তা ও পরিকাঠামোর উপযুক্ততা পরীক্ষা করা।
নিরাপত্তায় বাড়তি সতর্কতা
ট্রায়ালের সময় সংশ্লিষ্ট রুটের রেলক্রসিংগুলো সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। পাশাপাশি, ট্র্যাকের পাশে কংক্রিটের দেওয়াল তৈরি করে নিশ্চিত করা হয় যেন কোনও মানুষ, প্রাণী বা যানবাহন লাইনের ধারে না আসে। উচ্চগতির ট্রেনের জন্য এই ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমানো যায়।
যাত্রীদের জন্য বড় সুবিধা
দীর্ঘ ১,৫২৫ কিমি রুটে বর্তমানে রাজধানী, দুরন্ত, বন্দে ভারত সহ অন্যান্য ট্রেনগুলি সর্বোচ্চ ১৩০ কিমি গতিতে চলে। নতুন ব্যবস্থায় এই গতি বেড়ে ১৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা হলে যাত্রার সময় অনেকটাই কমে যাবে। উত্তর মধ্য রেলওয়ে বিভাগের ৭৫১ কিমি দীর্ঘ অংশে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন কাজ চলছে, যেখানে ট্র্যাক স্থায়িত্ব, নিরাপত্তা এবং যাত্রী সেবার মান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
ট্রায়ালের জন্য বাতিল ট্রেনের তালিকা
সফলভাবে ট্রায়াল সম্পন্ন করার জন্য কিছু ট্রেন সাময়িকভাবে বাতিল করা হয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে—
• ১২ ও ১৯ এপ্রিল: ২২৮০৫ ভুবনেশ্বর-আনন্দ বিহার এক্সপ্রেস
• ১৪ ও ২১ এপ্রিল: ২২৮০৬ আনন্দ বিহার-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেস
• ১৩–২৩ এপ্রিল: ১৮১২৫ রাউরকেল্লা-পুরী এক্সপ্রেস
• ১৪–২৪ এপ্রিল: ১৮১২৬ পুরী-রাউরকেল্লা এক্সপ্রেস
• ১৪–২২ এপ্রিল: ১৮১১৭ রাউরকেল্লা-গুণুপুর এক্সপ্রেস
• ১৫–২৩ এপ্রিল: ১৮১১৮ গুণুপুর-রাউরকেল্লা এক্সপ্রেস
• ১৩–২৩ এপ্রিল: ০২৮৩২ ভুবনেশ্বর-ধানবাদ স্পেশাল
• ১৪–২৪ এপ্রিল: ০২৮৩১ ধানবাদ-ভুবনেশ্বর স্পেশাল
আধুনিক রেলের পথে আরও এক ধাপ
এই উচ্চগতির ট্রেন পরীক্ষার সাফল্য ভারতীয় রেলের আধুনিকীকরণের পথে এক বড় পদক্ষেপ। সময় সাশ্রয়, যাত্রার মানোন্নয়ন এবং সর্বোপরি যাত্রী নিরাপত্তায় এই উদ্যোগ একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে চলেছে। ভবিষ্যতে আরও দ্রুত, সুরক্ষিত ও স্বাচ্ছন্দ্যময় রেলযাত্রার আশায় বুক বাঁধছেন যাত্রীরা।