রেলমন্ত্রকের নতুন পরিকল্পনা, সাধারণ ও জেনারেল টিকিটে পরিবর্তন।
উৎসব ও বিশেষ অনুষ্ঠানের সময় রেলস্টেশনগুলিতে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণে আনতে রেলমন্ত্রক নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে অন্যতম প্রস্তাব হলো অসংরক্ষিত টিকিটে নির্দিষ্ট ট্রেনের নাম ও নম্বর উল্লেখ করা। এই নতুন নিয়ম কার্যকর হলে, যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের আগে প্ল্যাটফর্মে প্রবেশ করতে পারবেন না, ফলে শেষ মুহূর্তে প্ল্যাটফর্ম পরিবর্তনের সম্ভাবনাও কমবে।
নয়াদিল্লি দুর্ঘটনার পর সতর্কতা
সম্প্রতি নয়াদিল্লি রেলওয়ে স্টেশনে পদদলিত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব সাধারণ টিকিট বুকিং ব্যবস্থায় পরিবর্তনের বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন। যদিও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী, ট্রেনের আসনসংখ্যার চেয়ে বেশি অসংরক্ষিত টিকিট ইস্যু করা যাবে না। পাশাপাশি, ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য প্ল্যাটফর্ম টিকিটের সংখ্যাও সীমিত রাখা হয়েছে।
রেলের ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা
রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে রেল ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ গ্রহণ করা হবে। বর্তমানে এক্সপ্রেস, সুপারফাস্ট, রাজধানী ও বন্দে ভারতের মতো ট্রেনগুলিতে সাধারণ টিকিটে ভ্রমণ বৈধ নয়। যদি কেউ সাধারণ টিকিট নিয়ে এসব ট্রেনে ওঠেন, তবে তাকে টিকিট ছাড়া ভ্রমণকারী হিসেবে গণ্য করা হবে।
রেল কোচ ও টিকিট ব্যবস্থা
ভারতীয় রেলের কোচ তিনটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত:
1. শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত (AC কোচ)
2. স্লিপার কোচ
3. সাধারণ কোচ (জেনারেল কোচ)
জেনারেল কোচগুলি অসংরক্ষিত থাকে এবং এখানে সাধারণ টিকিট নিয়ে যাত্রা করা হয়। নির্দিষ্ট আসন সংখ্যা না থাকায়, স্বল্প দূরত্বের যাত্রীরা এই কোচগুলিকে বেশি পছন্দ করেন।
সাধারণ টিকিটের ধরন
সাধারণ টিকিট দুই ধরনের হতে পারে:
1. ২০০ কিলোমিটারের কম দূরত্বের জন্য: এই টিকিট মাত্র তিন ঘণ্টার জন্য বৈধ। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যাত্রা শুরু না করলে তা অবৈধ গণ্য হবে এবং জরিমানা হতে পারে।
2. ২০০ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বের জন্য: এই টিকিট যাত্রার তিন দিন আগে পর্যন্ত বুক করা যায়।
নতুন পরিকল্পনার সম্ভাব্য প্রভাব
যদি সাধারণ টিকিটে ট্রেনের নাম ও নম্বর উল্লেখ করা হয়, তাহলে যাত্রীরা মাঝপথে ট্রেন পরিবর্তন করতে পারবেন না। তাদের নির্ধারিত ট্রেনেই সম্পূর্ণ যাত্রা করতে হবে। এই পরিবর্তনের ফলে যাত্রা আরও সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হবে।
এই নতুন ব্যবস্থা কার্যকর হলে, রেলস্টেশনগুলিতে অতিরিক্ত ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।