সম্প্রীতির মেলবন্ধনে মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির পূজো ১৭ দিন ধরে হয়

Published By: Khabar India Online | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদাঃ  সম্প্রীতির মেলবন্ধনে মালদহের চাঁচল রাজবাড়ির পূজো ১৭ দিন ধরে হয়।

মালদার চাঁচলে ছিল রাজবাড়ি। এখন রাজাও নেই। রাজত্বও নেই। রাজবাড়ির একটি অংশে তৈরি হয়েছে মহকুমা আদালত। আর একটি অংশে এখন কলেজ। একাংশে এখনো মন্দির রয়েছে। সময়ের তালে তাল মিলিয়ে রাজবাড়ির গৌরব স্তিমিত। কিন্তু ঐতিহ্যের গরিমায় আজও উজ্জ্বল তিনশো বছরেরও বেশি প্রাচীন এই রাজবাড়ির পুজো। সম্প্রীতির নিদর্শন চাঁচল রাজবাড়ির পুজো। ষষ্ঠীর ১২ দিন আগে।

কৃষ্ণা নবমী তিথি থেকে পুজো শুরু হয়। টানা ১৭ দিন ধরে এই পুজো হয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।প্রত্যেকটা বনেদি পুজোর মতোই এই পুজোরও নিজস্ব কিছু ঐতিহ্য ও কাহিনি আছে।

আরও পড়ুন -  প্রশাসনিক প্রধানদের নিয়ে বৈঠক করতে মালদায় এলেন পুলিশ পর্যবেক্ষক অনিল কুমার শর্মা

জানা যায় সতেরো শতকের শেষভাগ জুড়ে উত্তর মালদহের বিস্তীর্ণ এলাকার রাজা ছিলেন রামচন্দ্র রায়চৌধুরি। ধর্মপ্রাণ প্রজাদরদী রাজা হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল। কথিত আছে, একবার রাজা দেবী চণ্ডীর স্বপ্নাদেশে মহানন্দার ঘাটে স্নান করার সময় তাঁর হাতে চতুর্ভুজা অষ্টধাতুনির্মিত মূর্তি উঠে আসে। দেবী চণ্ডীর অষ্টধাতুর মূর্তি সতীঘাটা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে রাজবাড়িতে এনে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

সেদিন থেকেই রাজবাড়িতে শুরু হয় দেবীর নিত্যপুজো। প্রতিবছর মহাসমারোহে রাজবাড়ির দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীকালে পুজোর জন্য পাকা মন্দির নির্মাণ করেন। আজও প্রাচীন প্রথা মেনে সপ্তমী তিথিতে রাজবাড়ি থেকে দুর্গাদালানে নিয়ে আসা হয় অষ্টধাতুর চতুর্ভুজা মা চণ্ডীকে। দশমীতে তিনি ফের রাজবাড়িতে ফিরে যান। দীর্ঘ ১৭ দিন ধরে চলে পুজো।

আরও পড়ুন -  Back Home: প্রায় 20 বছর পরে বাড়ি ফিরতে পেরে একরাশ খুশি

রাজাও নেই।, রাজ্য পাট ও নেই রাজবাড়ীর পুজো পরিচালনা করে ট্রাস্টি বোর্ড। তবু ও রাজার সেই প্রাচীন রীতি মনে আজও মালদহের রাজ বাড়ীর দূর্গা পূজা হয়ে আসছে। প্রতিদিন পুজোর পাশাপাশি সন্ধ্যায় চলতে থাকে চন্ডীপাঠের আসর। যা দশমীর সন্ধ্যায় দেবী বিসর্জন পর্যন্ত চলতে থাকে। সেই রীতি আজও মেনে চলা হয়।

আরও পড়ুন -  United States: মিলল ১১৫ মরদেহ যুক্তরাষ্ট্রে পরিত্যক্ত ভবনে

দেবী এখানে চতুর্ভূজা সিংহবাহিনী। এলাকার মানুষের বিশ্বাস চন্ডীমণ্ডপের দেবীর জন্যই তারা সুরক্ষিত। সেই আবেগ, বিশ্বাসে ভর করেই ভক্তি-নিষ্ঠা, ঐতিহ্যের ওই পুজোয় একবারের জন্য হলেও হাজির হন স্থানীয়রা। রীতি মেনে অষ্টমীর দিন কুমারী পুজোও হয়। ওই দিন গোটা চাঁচলই হাজির হয় চন্ডীমণ্ডপে।

সেই আদিকাল থেকেই আজও দশমীর সন্ধ্যায় বিসর্জনের সময় সেখানকার অর্থাত্‍ মরা মহানন্দার নদীর ওপারের বৈরগাছি এলাকার মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ লণ্ঠন নিয়ে পথ দেখান মাকে। সেই রীতি এখনও প্রচলিত।