নিজস্ব সংবাদদাতা, বারুইপুরঃ বারুইপুর দমদমার সরদার পরিবারের ১৫০ বছরের পুজোয় গোপন রহস্য।
বারুইপুর দমদমার সরদার পরিবারের ১৫০ বছরের পুজোর গোপন রহস্য, মর্ত্যে নেমে বন্দুক ধরেছিলেন মা দুর্গা। এখনও সেই বিশ্বাসেই গুলি চলে পুজোয়।
দমদমা গ্রামে একবার বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়েছিল। কথিত আছে, গ্রামের মানুষদের রক্ষা করতে স্বয়ং দেবী দুর্গা দশ হাত দিয়ে বন্দুক হাতে চলে এসেছিলেন দমদমায় সর্দার পরিবারকে বাঁচাতে। মা নিজেই গুলি চালিয়ে সরদার পরিবার সহ গ্রামের মানুষজনকে বাঁচিয়েছিলেন।
শত্রুপক্ষকে হটিয়ে রক্ষা করেছিলেন গ্রামকে। তখন ছিল মাটির মন্দির। তারপর সেই মন্দিরকে দুর্গার মহিমা স্মরণীয় করে রাখতে সরদার পরিবার একটি নতুন পাকা মন্দির তৈরি করেন। দুর্গামূর্তি স্থাপনও হয়। তখন থেকে ঘটা করে পুজো করে আসছেন সরদাররা। পুজোর সময় দেবীর মহিমা প্রচারের জন্য বিসর্জনের আগে দু’বার বন্দুক থেকে আকাশে গুলি ছোঁড়ার রেওয়াজ আজও আছে। আগে বয়স্করা করতেন। বর্তমান নব প্রজন্ম সেই রীতি এখনও চালিয়ে আসছেন। এই মুহূর্তে বন্দুক পরিষ্কার করার কাজ চলছে।
বাংলা ১৩০৭ সাল থেকে এই পুজো হয়ে আসছে। পরিবারের সদস্যরা চাঁদা দিয়ে এই পুজো করেন। পুজো শুরু করেছিলেন মনোহর সরদার। বাড়ির প্রবীণ সদস্য রণজিৎ সরদার বলেন, ‘গ্রামের মানুষজন পূজোর কয়েকদিন আনন্দে মেতে ওঠেন। মন্দির সংস্কার করে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে । প্রতিমা তৈরির কাজ জোর কাদমে চলছে। জন্মাষ্টমীর দিন কাঠামো পুজোর পর প্রতিমা নির্মাণ শুরু হয় মন্দিরে।’ এই পরিবারের সদস্যরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন দেশে- বিদেশে। তবে সবাই বাড়ি আসেন পুজোর সময়। ষষ্ঠী থেকে নিরামিশ খান পরিবারের সদস্যরা। নবমীর দিন আমিষ। পরিবারের অন্য এক সদস্য বলেন, ‘মাকে প্রচুর রুপোর গয়না পরানোও হয়।
বংশপরম্পরায় প্রতিমা তৈরি করছেন স্থানীয় এক কুমোর পরিবার।’ পরিবারের নবীন সদস্য দীবাকর সরদার বলেন, “বংশপরম্পরায় এই পুজো করে আসছি আমরা। আমাদের দুর্গা খুব জাগ্রত। নিষ্ঠা ভাবে মানত করলে এখানে সঙ্গে সঙ্গে তার ফল স্বরূপ পাওয়া যায়। পরিবারের দেড়শো সদস্য সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ি পুজোর আয়োজনে। অষ্টমীর দিন অঞ্জলির পর এক কুইন্টালের উপরে বাতাসা হরির লুট দেওয়া হয়। মানত পূরণের জন্য মহিলারা দণ্ডি কাটেন এই মন্দিরে।