ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ৫ হাজারেরও বেশি রকেট হামলা চালায় শনিবার সকাল থেকে ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস। এর জবাবে ইসরায়েলও সামরিক হামলা চালানো শুরু করে। দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায়।
এমন পরিস্থিতিতে গাজা ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পণ্যসামগ্রী সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।
রবিবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা পরিষদ গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পণ্য সরবরাহ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ‘হামাসের সামরিক এবং সরকারি সক্ষমতা ধ্বংস’ করার পদক্ষেপগুলো অনুমোদন দিয়েছে।
অপরদিকে বার্তাসংস্থা এপির তথ্য অনুযায়ী, সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু বলছে, গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পণ্য সরবরাহ বন্ধ করার পদক্ষেপ নিয়েছে ইসরায়েল।
শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গাজায় বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং পণ্য সরবরাহ বন্ধ করবে ইসরায়েল। হামাসের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযানের ‘প্রথম পর্যায়’ শেষ হয়েছে, হামাস যোদ্ধাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে ইসরায়েল।
হামাসের বিরুদ্ধে কোনও ধরনের ‘অবকাশ ছাড়াই’ আক্রমণ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েল থেকে ফিলিস্তিনের এই অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়ে থাকে, সেই বিদ্যুতই এই ভূখণ্ডের প্রায় সকল অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। শনিবার রাত থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গাজার বেশিরভাগ অঞ্চলে রাতে অন্ধকারে থাকে।
আগে শনিবারের ইসরায়েলি হামলায় ২৩০ জন নিহতের পাশাপাশি এক হাজার ৬১০ জন আহত হয়েছেন। উল্টোদিকে হামাসের হামলায় আড়াইশ ইসরায়েলি নিহতের পাশাপাশি এক হাজার ১১ জনের মতো আহত হয়েছেন বলে জানায় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম এন১২ নিউজ।
সর্বশেষ তথ্য বলছে, এক হাজার ৪৫২ জন ইসরায়েলি চিকিৎসাধীন। তার মধ্যে ২৬৭ জনের অবস্থা গুরুতর।
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা পরিচালনাকারী গোষ্ঠী হামাসের ভয়াবহ এই হামলায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৬০০ ইসরায়েলি। অনেকের অবস্থা গুরুতর। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, হামলার পর আহতদের চাপ বেড়েছে দক্ষিণ ইসরায়েল এবং গাজার সবগুলো হাসপাতালে। অপরদিকে পৃথক এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছেন, গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ২৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ১ হাজার ৬৯৭ জন।৫০ বছর আগের ইয়ম কিপ্পুর যুদ্ধের পর এটিই সর্বোচ্চ সংখ্যক ইসরায়েলি নিহতের ঘটনা।
সূত্রঃ আল জাজিরা, এপি। ছবিঃ সংগৃহীত।