রুশ তেল কিনবে ভারত আরও

Published By: Khabar India Online | Published On:

সস্তায় আরও রুশ তেল কিনবে ভারত। এ ব্যাপারে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি রসনেফটের সঙ্গে আলোচনা করছে ভারতের পেট্রোলিয়াম করপোরেশন লিমিটেড (বিপিসিএল)। তেল ক্রয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত হলে ভারতে রুশ তেলের আমদানি আরও বাড়বে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুবাই বেঞ্চমার্ক বা দুবাই মানের ওপর ভিত্তি করে কম দামে রাশিয়া থেকে প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন বা ৪ কোটি ৩৮ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল কিনতে আলোচনা করছে ভারতের একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন কোম্পানি। ভারতকে ব্যারেলপ্রতি ৮ ডলার ছাড় দিতে পারে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় জ্বালানি কোম্পানি রসনেফট। এ পরিস্থিতিতে দুবাই বেঞ্চমার্কে ভারতের কাছে তেল বিক্রি করা গেলে তাতে রাশিয়া বেশ লাভবান হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্ভাব্য চুক্তির অধীনে রসনেফট প্রতি মাসে প্রায় ৭ লাখ থেকে ৭ লাখ ২০ হাজার ব্যারেলের সমপরিমাণ ৬ থেকে ৭ কার্গো অপরিশোধিত তেল সরবরাহ করবে ভারতের বিপিসিএলের কাছে। ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত এ চুক্তি কার্যকর।

আরও পড়ুন -  Durga Pujo: পূজোয় ত্বকের যত্ন কেমন হবে

সংশ্লিষ্ট সূত্র রয়টার্সকে জানায়, চুক্তিটির জন্য দুই দেশের আলোচনা অনেকখানি এগিয়েছে। উভয় পক্ষ অর্থ প্রদানের শর্তসহ খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে। এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য রয়টার্সের অনুরোধের জবাব দেয়নি বিপিসিএল এবং রসনেফট।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জ্বালানি তেল বিক্রির ক্ষেত্রে ধীরে ধীরে ইউরোপভিত্তিক বেঞ্চমার্ক থেকে সরে যাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়ার তেল বিক্রির বেশির ভাগ এখন এশিয়ার দিকে চলে গেছে। খবরে বলা হয়েছে, আলোচিত নতুন চুক্তির মাধ্যমে বিপিসিএল রাশিয়ার সোকোল, ভারান্দে ও উরালসহ বিভিন্ন গ্রেডের তেল আমদানি করতে চাইছে।

আরও পড়ুন -  ঘূর্ণিঝড় 'বিপর্যয়' আঘাত হানবে সন্ধ্যায়

আগে গত এপ্রিলে শীর্ষ তেল পরিশোধন কোম্পানি ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) রসনেফটের সঙ্গে প্রতি মাসে ১৫ লাখ মেট্রিক টন জ্বালানি তেলের জন্য একটি চুক্তি করে। ওই চুক্তির অধীনে মধ্যপ্রাচ্যের বেঞ্চমার্কের তুলনায় ব্যারেলপ্রতি ৮ থেকে ১০ ডলার ছাড়ে তেল বিক্রি করতে সম্মত হয় রাশিয়া।

প্রসঙ্গত, ভারতের সবচেয়ে বড় অপরিশোধিত তেল সরবরাহকারী দেশ হলো রাশিয়া। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং সতর্কবার্তা সত্ত্বেও ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে এই তেল মূল্য ছাড়ে অর্থাৎ কম দামে বিক্রি করছে রাশিয়া। মস্কোকে চাপে ফেলার অংশ হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বরে রাশিয়ার অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম বেঁধে দেয় জি-৭ এবং তার মিত্রদেশগুলো। প্রতি ব্যারেলের দাম সর্বোচ্চ ৬০ ডলার নির্ধারণ করে দেয়া হয়।

আরও পড়ুন -  Bus Accident: নিহত ২২, পাকিস্তানে বাস দুর্ঘটনায়

উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে উত্তোলন করা অপরিশোধিত তেলের বিভিন্ন ধরন এবং গ্রেড রয়েছে। এগুলোর মধ্যে পার্থক্য করে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য তেলের রেফারেন্স বা তুলনীয় দাম নির্ধারণের জন্য বেঞ্চমার্ক ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক প্রধান তিনটি বেঞ্চমার্ক হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই), ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) জন্য উত্তর সাগরভিত্তিক ব্রেন্ট ক্রুড এবং মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক দুবাই ক্রুড।

এগুলো ছাড়াও তেল রপ্তানিকারী দেশগুলোর সংগঠন ওপেক বাস্কেট, রাশিয়ায় উরাল তেল, সিঙ্গাপুরের ট্যাপিস ক্রুড, ওমানের ওমানি ক্রুড, নাইজেরিয়ায় বনি লাইট এবং মেক্সিকোর ইশথমাস-ইত্যাদি সুপরিচিত। এশিয়ার দেশগুলোতে সরবরাহ করা পারস্য উপসাগরীয় তেলের জন্য প্রধান মান ধরা হয় দুবাই ক্রুডকে।

 ছবিঃ প্রতীকী