নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্ধোধন করা হলো আজ। রবিবার নয়া দিল্লিতে পূজা-আর্চনা এবং ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসরণ করে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন বয়কট করেছে বেশিরভাগ বিরোধী দল। কারণ তারা চেয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী মোদির বদলে প্রেসিডেন্ট দ্রৌপদী মুর্মু এটির উদ্বোধন করুন।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তার আগে পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন উপলক্ষে সকাল সোয়া ৭টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান নরেন্দ্র মোদি। তারপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে ঐতিহাসিক রাজদণ্ড ‘সেঙ্গোল’ হস্তান্তর করা হয়। নরেন্দ্র মোদি রাজদণ্ডটি নিয়ে লোকসভা কক্ষে যান ও স্পিকারের চেয়ারের পাশে স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী নতুন পার্লামেন্ট ভবন তৈরির সঙ্গে জড়িত একদল নির্মাণ শ্রমিককে সংবর্ধনা দেন।
গত ২৪ মে সম্মিলিতভাবে ১৯টি বিরোধীদল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ঘোষণা করে। এই তালিকায় কংগ্রেস এবং তৃণমূল ছাড়াও আম আদমি পার্টি, শিব সেনা (উদ্ধব শিবির), আরজেডি, জেডিইউ, ডিএমকে, এনসিপি ও সিপিআইএম-সহ গুরুত্বপূর্ণ বিরোধী দল আছে।
পুরোনো পার্লামেন্ট ভবনটি ১৯২৭ সালে তৈরি করা হয়েছিল। বয়স এখন ৯৬ বছর। সরকার বলছিল, বর্তমান সময়ের তুলনায় পার্লামেন্ট ভবনটি উপযুক্ত নয়।
নবনির্মিত পার্লামেন্ট ভবনটি ত্রিভুজাকার আকৃতির ডিজাইনে নির্মিত হয়েছে। চারতলা এই ভবনের মোট বিল্ট আপ এরিয়া ৬৪,৫০০ বর্গ মিটার৷ ভবনের তিনটি প্রবেশদ্বার রয়েছে, জ্ঞান দ্বার, শক্তি দ্বার ও কর্ম দ্বার৷ ভবন নির্মাণে খরচ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা। মোট নয় হাজার শ্রমিক নতুন ভবন নির্মাণে হাত লাগিয়ে ছিলেন। এটির আর্কিটেক্ট ডিজাইন করেন স্থপতি বিমল প্যাটেল।
নবনির্মিত পার্লামেন্ট ভবনটির লোকসভা কক্ষে ৪৪৪জন ও রাজ্যসভা কক্ষে ৩০০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। এ ছাড়া উভয় কক্ষের যৌথ বৈঠকের জন্য লোকসভা কক্ষে ১ হাজার ২৮০ জনের বসার ব্যবস্থা রয়েছে। পার্লামেন্ট সদস্যদের জন্য লাউন্জ, লাইব্রেরি, বিভিন্ন কমিটির ঘর, খাওয়া দাওয়ার জায়গা ও সুবিস্তৃত পার্কিং স্পেস রয়েছে৷ পার্লামেন্ট ভবনের অন্দরসজ্জায় ভারতের তিনটি জাতীয় প্রতীক পদ্ম, ময়ূর ও বট গাছ রয়েছে।
তৈরিতে ব্যবহৃত সামগ্রীগুলো সারা দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। যেমন, সেগুন কাঠ আনা হয়েছে মহারাষ্ট্রের নাগপুর থেকে, লাল-সাদা বেলেপাথর আনা হয়েছে রাজস্থানের সরমথুরা থেকে ও উত্তর প্রদেশের মির্জাপুর থেকে আনা হয়েছে কার্পেট। করোনা মহামারির সময়ে ২৪ হাজার কোটি টাকার ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছিল মোদি সরকার। নতুন পার্লামেন্ট ভবনটি সেই প্রকল্পেরই অংশ। তখনই এই ব্যয়বহুল প্রকল্প নিয়ে নানা মহলে কথা ওঠে। বিরোধীরা সমালোচনা করেছিলেন। সকল সমালোচনা উপেক্ষা করে মোদি সরকার নতুন পার্লামেন্ট ভবন তৈরির কাজ শেষ করে।
সূত্রঃ এনডিটিভি। ছবিঃ সংগৃহীত