(সিপিআই) পরিমাপ করা পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি আগের সব রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তীব্র বৃদ্ধির কারণে ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
শনিবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
এক মাস থেকে অন্য মাসে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৩.৭২ শতাংশ, গত বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ২৭.২৬ শতাংশ৷
জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৬৫ সালের জুলাই থেকে তথ্য সংরক্ষণ শুরুর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি ৩১ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে। আগে, ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ২৯ শতাংশের সামান্য বেশি রেকর্ড করা হয়েছিল। চলতি বছরের জানুয়ারির তুলনায় ফেব্রুয়ারিতে মাসিক মূল্যস্ফীতির হার বেড়েছে ৪ দশমিক ৩ শতাংশ।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের জ্বালানি এবং খাদ্যের দাম বাদ দিয়ে গণনা করা মূল মূল্যস্ফীতিও গত মাসে শহরাঞ্চলে ১৭ দশমিক ১ শতাংশ ও গ্রামাঞ্চলে ২১ দশমিক ৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের আর্থিক অব্যবস্থা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী শক্তি সংকট ও বিধ্বংসী বন্যার কারণে ২০২২ সালে দেশের এক তৃতীয়াংশ জলমগ্ন হয়।
বর্তমানে যা ঋণ, এর ফলে তাদের কোটি কোটি ডলার অর্থায়নের প্রয়োজন। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে। দরিদ্র পাকিস্তানিরা এই অর্থনৈতিক অস্থিরতার শিকার। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কমাতে সরকার-সমর্থিত কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে আটা-ময়দা বিতরণের কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে। রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে ভিড়ে পিষ্ট হয়ে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
করাচির অর্থনৈতিক বিশ্লেষক শাহিদা উইজারাতের তথ্য অনুযায়ী ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, আমি মনে করি দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জানিয়েছে, তাদের থেকে ৬৫ কোটি ডলারের সাহায্য পেতে গেলে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপে কিছু লক্ষ্য পূরণ করতে হবে পাকিস্তানকে।
অর্থমন্ত্রণালয় বলেছে, অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের আপেক্ষিক চাহিদা ও সরবরাহের ব্যবধান, বিনিময় হারের মূল্যহ্রাস ও সম্প্রতি পেট্রোল এবং ডিজেলের নিয়ন্ত্রিত দামের ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয়ের ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।