একসঙ্গে চাকরি হারিয়েছিলেন ১১ হাজার কর্মী গত বছরের নভেম্বর মাসে। আবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে ফেসবুকের মূল সংস্থা মেটা। এই কারণে সংস্থার একাধিক টিমের বাজেটও বরাদ্দ করা হয়নি। শনিবার পরিস্থিতির সাথে পরিচিত মেটা দুই কর্মচারীর কথা অনুযায়ী, এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ ব্যাবসায়িক দৈনিক ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিগত বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই মেটা প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন বিভাগে বাজেট বরাদ্দ এবং কর্মী সংখ্য়া নিয়ে ধোঁয়াশা ছিল। চলতি সপ্তাহেই সংস্থার অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গেল, নতুন করে আবার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে মেটা। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ সহ মেটার মালিকানাধীন একাধিক সংস্থার কর্মী ছাঁটাই করা হবে বলে জানা গেছে। এবার কতজন কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করা হয়েছে এখনও জানা যায়নি।
চলতি মাসের শুরুতেই মেটা ঘোষণা করেছে, ২০২৩ সালে সংস্থার ৮৯ থেকে ৯৫ বিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। সিইও মার্ক জাকারবার্গও এই বছরকে ‘কর্মক্ষমতার বছর’ বলে উল্লেখ করেছিলেন। সেই কর্মক্ষমতা বাড়াতেই ফের একবার কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
খরচ কমাতে শুধু কর্মী ছাঁটাই-ই নয়, অফিস বন্ধেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে মেটা। সংস্থার কর্মীদের ডেস্ক ভাগাভাগি করে কাজ করতে বলা হয়েছে বলেও তথ্য পেয়েছে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস।
মানবসম্পদ নিয়ে কাজ করে এমন কয়েকটি সংস্থার দাবি, ২০২২ সাল থেকে ছাঁটাইয়ের প্রকোপ সবচেয়ে বেশি পড়েছে প্রযুক্তিক্ষেত্রে। গত বছর শুধুমাত্র প্রযুক্তিক্ষেত্রে কাজ হারিয়েছেন ৯৭ হাজারেরও বেশি মানুষ। যা গত বছরের তুলনায় ৬৪৯ শতাংশ বেশি বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।
প্রযুক্তিক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা এই মুহূর্তে বিপুল ছাঁটাইয়ের কারণ হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)-কে দায়ী করছেন। এআই-এর পেছনে বিনিয়োগের পরিমাণ ক্রমেই বাড়াচ্ছে প্রযুক্তি সংস্থাগুলো।
প্রযুক্তিক্ষেত্রে বর্তমানে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে এআই-এর পেছনে বিনিয়োগ কমানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না কোনও কোম্পানি। সংস্থার আয় বৃদ্ধির নতুন পথও পাওয়া যাচ্ছে না। স্বভাবতই কর্মী ছাঁটাই করে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার মরিয়া চেষ্টা চলছে।
সূত্রঃ রয়টার্স। ছবিঃ প্রতীকী